হামলায় জামায়াত নেতার মৃত্যুর অভিযোগ, বিএনপির তদন্ত কমিটি গঠন

লক্ষ্মীপুরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় কাউছার আহমেদ মিলন (৬০) নামে এক জামায়াত নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। শুক্রবার (৬ জুন) রাত ১২টার দিকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপি নেতা হাসিব বলেন, জামায়াত নেতার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন, সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান হারুন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন রনিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে তাদের তদন্তের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া হাসিব তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ‘দয়া করে হিংসা এবং মিথ্যা ছড়াবেন না। সবাই ধৈর্যের পরিচয় দিন।’
নিহত কাউছার আহমেদ সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে ও বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন।
আরও পড়ুন
নিহতের পরিবার ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে দায়ী করেছেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় একটি ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়।
নিহতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে একই এলাকার রিয়াজ হোসেন বাবলু ও সোহাগদের সঙ্গে মারামারি হয় জামায়াত নেতা কাউছারের ভাই আলতাফ হোসেন আরজুর। ঘটনার সময় কাউছারসহ তার পরিবারের চারজন আহত হন। পরে তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর বিকেলে কাউছার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় মারা যান। স্বজনদের দাবি, রিয়াজসহ অন্যদের মারধরের কারণে কাউছার মারা গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কাউছারের ভাতিজা দেড় মাস আগে এলাকায় একটি টিউবওয়েল চুরি করে। সে ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে টুকামিয়ার পুল এলাকায় রিয়াজ তাকে আটক করেন। খবর পেয়ে আরজু গিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। সেসময় উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়। পরে উভয়পক্ষ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। পরে রিয়াজরা এ ঘটনায় সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার প্রায় ৫ ঘণ্টা পর কাউছার মারা যান।
অভিযুক্ত রিয়াজ বলেন, আরজুর ছেলে মসজিদের টিউবওয়েল চুরি করে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে আটক করলে আরজু আমাকে মারধর করে। এ ঘটনায় আরজুর সঙ্গে আমার ঝামেলা হয়েছে। নিহত কাউছারের সঙ্গে আমাদের কোনো কিছুই হয়নি। সন্ধ্যায় তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে শুনেছি।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেন, নিহতের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তবে কী কারণে তিনি মারা গেছেন তা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এসএসএইচ