নীলফামারীতে কুরবানির পশু কাটতে গিয়ে আহত ৬২

নীলফামারীতে কুরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬২ জন। তাদের মধ্যে একজনের আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রোববার (৮ জুন) বিকেলে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ও সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহার দিন জেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য কুরবানির পশু জবাই করা হয়েছে। এসব পশু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে মৌসুমি কিছু কসাই ও পরিবারের সদস্যরা হাতে-পায়ে ধারালো ছুরির আঘাতে আহত হন। তাদের মধ্যে স্থানীয় ১০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৩৯ জন ও নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ২৩ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহতদের বেশিরভাগই হাত-পায়ের আঙুলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি বা চাপাতির আঘাতে জখম হয়েছেন। এর মধ্যে গরুর হাড় কাটতে গিয়ে চিরিরবন্দর উপজেলার চৌধুরী হাট এলাকার নাজমুল হক (৪৪) চাপাতির কোপে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল হারান।
আহতদের অনেকে জানিয়েছেন, মৌসুমি কসাইদের ঘাটতির কারণে পরিবারের সদস্যদের দিয়েই পশু জবাই ও মাংস কাটার কাজ করানো হয়েছে। এতে অসচেতনভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ধারালো ছুরি ও চাপাতি। ফলে ঘটেছে একের পর এক দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রকৃত আহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। অনেকেই হাসপাতালের বদলে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে সৈয়দপুর শহরের কয়ানিজপাড়ার মাসুম মিয়া জানান, কাঠের গুঁড়িতে মাংস রেখে কাটার সময় পায়ে কোপ পড়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার পায়ে সেলাই দেওয়া হয়েছে।
চিরিরবন্দর উপজেলার চৌধুরী হাটের নাজমুল হক জানান, কোরবানি দেওয়ার পর গরুর মাংস কাটার সময় অসাবধানতাবশত চাপাতির কোপে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হাসপাতালে গিয়ে ব্যান্ডেজ করে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. হাইয়ুল কবির ঢাকা পোস্টকে জানান, শনিবার সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৯ জন রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা সবাই কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাকিদের কারও অবস্থাই গুরুতর নয় বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া একই দিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে আরও ১৫ জনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
শরীফুল ইসলাম/আরএআর