খুলনায় গরুর পচা মাংস জব্দ, গ্রেপ্তার ২

খুলনার পৃথক দুটি স্থানে মরা গরুর মাংস ও পচা মাংস সংরক্ষণ ও বিক্রির অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) খুলনা মহানগরীর গল্লামারী এমএ বারী সড়ক এবং কয়রা উপজেলা বাজারে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনায় বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা ৪ মণ ৩০ কেজি মরা গরুর মাংস ও পিকআপসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় খাদ্য নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নিকারীপাড়া জলিলপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফের ছেলে মো. মমিন এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা আলীর ক্লাব সংলগ্ন আল আমিন মহল্লার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদারের ছেলে তামিম হাওলাদার।
সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, এএসআই মো. আলিম হোসেন গল্লামারী এম এ বারী সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি পিকআপ (ন-১১-১২৯০) বারী সড়কে প্রবেশ করলে তার সন্দেহ হয়। এ সময় পিকআপ থামিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে গাড়িতে থাকা মমিন জানান- গরুর মাংস রয়েছে। ৪ মণ ৩০ কেজি পরিমাণ মাংস পলিথিনের ওপর অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা মোমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল আমিন এলাকার বাসিন্দা তামিমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাংস চুয়াডাঙ্গা থেকে আনা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে তামিমকে ডেকে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মাংসের প্রকৃত মালিকের নাম ও ঠিকানা পুলিশের কাছে জানান তিনি। পুলিশ মাংসের প্রকৃত মালিক চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার সাহারেজ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে। এ সময় তিনি পুলিশকে জানান- বুধবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় গরুটি স্ট্রোক করলে জবাই করা হয় এবং ৬৩ হাজার টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করা হয়। রাত ৩টার দিকে গরুর মাংস পিকআপে করে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আসামিরা বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগাক্রান্ত এবং মৃত গরুর মাংস সংগ্রহ করে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন হোটেলে সরবারাহ করে থাকে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে খাদ্য নিরাপত্তা আইনে থানায় মামলা করা হয়েছে। জব্দ হওয়া মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য ১ কেজি রাখা হয়েছে, বাকি অংশটুকু আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে খুলনার কয়রা বাজারে পচা গরুর মাংস বিক্রির দায়ে সিদ্দিক মোড়ল নামে এক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তিনি মেঘের আইট গ্রামের আব্দুর রহিম মোড়লের ছেলে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুলি বিশ্বাস।
জানা যায়, কয়রা বাজারের সিদ্দিক মোড়লের গরুর মাংসের দোকান থেকে সকালে এক ক্রেতা মাংস কিনে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে মাংসের পিলিথিন খুললে গন্ধ বের হলে তিনি মাংসের দোকানে ফিরে এসে ওই ব্যবসায়ীকে পচা মাংস বিক্রির কথা জানান। এছাড়া বিষয়টি তিনি বাজার কমিটিকে জানান। পরে বাজার কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তাৎক্ষণিক ওই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে পচা মাংস বিক্রির দায়ে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুলি বিশ্বাস।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর