কেএমপির কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে ছাত্র-জনতার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ছাত্র-জনতা। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে শনিবার (২৮ জুন) দুপুর ১২টা থেকে ‘খুলনা অচল’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি এ ঘোষণা দেন।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আসামি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত কুমার দাশকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে তাকে। পরে আদালত সুকান্তকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সুকান্ত কুমার দাশ বর্তমানে সংযুক্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশে কর্মরত।
আন্দোলনকারীরা জানান, এসআই সুকান্ত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। সেই সুকান্তকে জনতা আটক করে পুলিশে সোপার্দ করে। অথচ তার নামে একাধিক মামলা থাকার পরও পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এ জন্য আমরা কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ চাই। পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকা থেকে এসআই সুকান্তকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাতেই তাকে ছেড়ে দেয় খানজাহান আলী থানা পুলিশ। সুকান্তের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন ও গণগ্রেপ্তার চালানোর অভিযোগ ছিল। অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয়।
পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পরও এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে গত বুধবার দুপুর থেকে কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা কেএমপি সদর দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাত সাড়ে ৯টায় ছাত্ররা চলে গেলে তালা ভেঙে কার্যালয় থেকে বের হন পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে বুধবার বিকেলে ফের কেএমপি ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
সর্বশেষ, এসআই সুকান্তকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার পর ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৪টা থেকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে কেএমপি ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্র-জনতা।
আরও পড়ুন
খানজাহান আলী সড়কে কেএমপির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় ছাত্র-জনতা কেএমপির সামনের সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। চলে রাত ৮টা অবধি। পরবর্তীতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বেধে দিয়ে খুলনা অচলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
মোহাম্মদ মিলন/এমএন