বিএনপির সমাবেশে বহিষ্কৃত নেতাদের বক্তব্য!

নোয়াখালীর সেনবাগে বিএনপির এক সমাবেশে দল থেকে বহিষ্কৃত দুই নেতার মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।
গত ৬ জুলাই বিকেলে সেনবাগ থানার মোড়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ আয়োজনে ‘শারীরিক নির্যাতন দিবস’ উপলক্ষ্যে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চাঁদাবাজির অভিযোগে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা সাহেব উদ্দিন রাসেল ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ সানাউল্যাহ।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ জুলাই শেরেবাংলা নগরে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে নির্মম হামলার শিকার হন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। ওই দিন ডিবির তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও ডিএমপির অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার তার ওপর হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেন এবং হত্যাচেষ্টাও চালান বলে অভিযোগ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট ফারুক নিজেই বাদী হয়ে হারুন ও বিপ্লবসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিগত এক যুগ ধরে এই ঘটনার বিচার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে আসছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

সেই ঘটনাকে সামনে রেখে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি জয়নুল আবদিন ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহ
আরও পড়ুন
বুব আলমগীর আলো, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া ও সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তবে বহিষ্কৃতদের মঞ্চে উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।
সেনবাগ বাজারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, সেনবাগে বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত। তিনটি আলাদা গ্রুপ তৈরি করেছে, যার প্রভাব পড়ছে কর্মসূচিতে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. ওবায়দুল হক চেয়ারম্যান বলেন, কেন্দ্র থেকে বহিষ্কৃতদের কর্মসূচিতে নিষেধ থাকলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না। মনে হয় সেনবাগে ভিন্ন একটি বিএনপি চলছে। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রকে জানিয়েছি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাহেব উদ্দিন রাসেলকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি চাঁদাবাজির একটি অডিও ফাঁসের ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়। অপরদিকে, ২৭ জুন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করায় বহিষ্কৃত হন মোহাম্মদ সানাউল্যাহ। কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশ ছিল, তাদের সঙ্গে কেউ কোনো যোগাযোগও রাখবে না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সাহেব উদ্দিন রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। বর্তমানে গ্রুপিং রাজনৈতি থাকায় আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা দলকে ভালবাসি। দলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
অন্যদিকে, সানাউল্যাহর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা অনুষ্ঠান শুরুর আগে বিষয়টি জানতাম না। পরে বিষয়টি জানতে পেরেছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে এমন আয়োজন করা ঠিক হয়নি। আমরা ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকব।
হাসিব আল আমিন/আরকে