মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়ে শাবিপ্রবিতে মানববন্ধন

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০২১ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাবিপ্রবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাম্মিল হুসাইন সাইমন এর মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরো শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে মানববন্ধন করেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মুমিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাইমন ঢাকার একটি ওয়েব ডিজাইন প্রতিষ্ঠানে প্রোগ্রামার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বাউনিয়া থেকে তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানের সামনে সিটিটিসি তাকে অপহরণ করে। পরে তাকে 'ব্লগার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তাকে কখনো আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, কখনো হিজবুত তাহরির, কখনো শিবিরের কর্মী ট্যাগ দেওয়া হতো।
সাইমনের ভাই আব্দুল্লাহ আল হোসাইন জানান, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাকে গ্রিলে ঝুলিয়ে রাখা হয়, ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়, জয়েন্টে আঘাত করা হয় এবং ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। তিনি স্বীকারোক্তিতে সই করতে অস্বীকার করলে তার বাবা ও ভাইকে গুমের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে তিনি সিটিটিসির লিখিত স্বীকারোক্তিতে সই করতে বাধ্য হন। এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২০২১ সালে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তার ভাই।
মানববন্ধনে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার বলেন, আমাদের ১১-১২ সেশনের সিএসই বিভাগের মেধাবী ছাত্র মোজাম্মিল হুসাইন সাইমন, যিনি আজ দীর্ঘ ৮ বছর ধরে জেলে। তার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। শুধু একটি জোরপূর্বক আদায়কৃত স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে তাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। একজন মানুষকে এমনভাবে বন্দি করে রাখা, তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো, পরিবারকে গুমের হুমকি দেওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ। আমরা অতিদ্রুত তার মামলার পুনঃতদন্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে বিভাগে দীর্ঘদিন পেয়েছি। সে অত্যন্ত মেধাবী এবং ভালো প্রোগ্রামার ছিল। তার অপরাধ সে একজন ভালো প্র্যাকটিসিং মুসলিম। হাসিনার বাহিনী এটা সহ্য করতে পারেনি। তাই থাকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে বছরের পর বছরের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই এই ঘটনার পুনঃতদন্ত হোক। জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ।”
জুবায়েদুল হক রবিন/এসএমডব্লিউ