সারাদেশে শাপলার গণজোয়ার দেখে আমাদের শাপলা প্রতীক দেওয়া হয়নি

সারাদেশে এনসিপির সাড়া দেখে বলা হচ্ছে নিবন্ধনের কাগজে ঝামেলা আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় হাতিয়া পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশে একটা এস্টাবলিশমেন্ট আছে তারা চায় দেশ একইভাবে চলবে তাহলে তাদের প্রত্যেকের পকেটে টাকা যাবে। আর আমরা যারা নতুন রাজনীতির কথা বলি আমাদের প্রত্যেকের মানসিকতা হচ্ছে পুরো এই ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলবো। আমাদের এই অভ্যুত্থানে আমরা প্রত্যেকে গুলির সামনে থেকে ফিরে আসছি। আমাদের প্রত্যেকের চিন্তা হচ্ছে একজন মেম্বার (ইউপি সদস্য) কীভাবে সৎভাবে নির্বাচিত হবে, সৎ মানুষ কীভাবে মেম্বার (ইউপি সদস্য) নির্বাচিত হবে সেই পরিস্থিতি আমরা তৈরি করবো সমাজে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চিন্তা হচ্ছে একটা নিয়োগের ক্ষেত্রে, পুলিশ অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটি টাকা আপনারা ঘুষ খান সেই ঘুষ ব্যতীত একটা যোগ্য ব্যক্তি কীভাবে নিয়োগ পাবে। তাহলে আপনাদের কাছ থেকে টাকা খেতে পারবে না। মানুষকে ভালো সার্ভিস দেবে। আমরা এই যে এতো পরিবর্তনের কথা বলছি সারাদেশব্যাপী সেটা পলিটিকাল এস্টাবলিশমেন্ট বলেন যারা এতদিন বড় বড় নেতা ছিল, মেম্বার (ইউপি সদস্য) ছিল, এমপি ছিল, মন্ত্রী ছিল তারা কিন্তু এটা সহ্য করতে পারে না।
তিনি বলেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা সহ্য করতে পারে না। আমলারা সহ্য করতে পারে না, পুলিশ অফিসাররা সহ্য করতে পারে না, আর্মি সহ্য করতে পারে না কেউই সহ্য করতে পারে না সেই জন্য সবার শত্রু হই। আমরা এনসিপি একটা রাজনৈতিক দল করলাম সারাদেশে এতো সমর্থন, হাজার হাজার মানুষ আমরা যেখানে যাই সেখানে যে সাড়া আমাদের এতো নেতাকর্মী আছে। আমরা বললাম আমরা শাপলা প্রতীক দলের প্রতীক হিসেবে চাই। কয়েকদিনে যখন দেখল শাপলা প্রতীকের সাড়া, জোয়ার শুরু হয়েছে, মানুষজন শাপলা নিয়ে এসে এসে আমাদের দিচ্ছে। বলে যে শাপলাকে দলের প্রতীক হিসেবে দেওয়া যাবে না।
হান্নান মাসউদ বলেন, প্রথমে বলেছে দেওয়া যাবে আপনারা প্রস্তাব করেন। আমরা তাদের সাথে কথা বলে প্রপোজাল দিয়েছিলাম এখন বলছে দেওয়া যাবে না। এটা এস্টাবলিশমেন্ট। আপনারা বলতে পারেন আপনাদের সরকার কেন দিচ্ছে না। সরকারও একটা এস্টাবলিশমেন্ট, একটা প্রক্রিয়া, প্রসেসটাই হচ্ছে এমন একেবারে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত-রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত পুরোটা মিলিয়ে সরকার। সরকার এককভাবে ড. ইউনূস একজন না।
তিনি বলেন, যখন সারাদেশে এত হাজার হাজার মানুষের সাড়া তখন বলতেসে নিবন্ধনের কাগজে নাকি ঝামেলা আছে। নিবন্ধন দেওয়া যাবে কিনা সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। প্রতিটি জায়গায় কিভাবে বাধা সৃষ্টি করা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বলেছি শেখ হাসিনার গুলির বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে লড়াই করেছি এই এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে সেভাবে লড়াই করবো। আমরা পরিবর্তন আনবো ইনশাআল্লাহ। সেটা এই হাতিয়ায় আনবো, সেটা সারা বাংলাদেশে আনবো ইনশাল্লাহ। আমাদের এই পরিবর্তনের ছোয়া সারা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাব ইনশাল্লাহ। ওই যে বলছিনা, একজনের জন্য ১০ লাখ টাকা বাজেট সেই বাজেট প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছাবে। এটার জন্য আমরা আপনাদেরকে সঙ্গী হিসেবে চাই।
আলহাজ্ব মাওলানা শামছুল হুদার সভাপতিত্বে উঠান বৈঠকে আব্দুল হান্নান মাসউদের বাবা আমিরুল ইসলাম মাওলানা আবদুল মালেক, এ গণী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শামছুত তিব্রিস, জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া উপজেলা প্রতিনিধি ইউসুফ রেজা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/এমএএস