বাঁশ টাঙানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ২১

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মানুষ চলাচলের সড়কে পাট শুকানোর বাঁশ টাঙানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ কমপক্ষে ২১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে সাতজনকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তম সরকার (৩০) নামে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা যায়, বাজিদাদপুর গ্রামের নীতিশ কুমার বালা (৫৫) ও জগদ্বীশ কুমার বিশ্বাসের (৬০) মধ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা-সংলগ্ন জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করে সীমানা নির্ধারণ পিলার বসিয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জগদ্বীশ বিশ্বাসের পক্ষের লোকজন পাট শুকানোর বাঁশ টাঙাতে গেলে প্রতিপক্ষ নীতিশ কুমার বালার লোকজন তাদের বাঁধা দেয়। এ সময় বাঁশ সরানো নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ২১ জন আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উভয় পক্ষের সাতজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
গুরুতর আহতরা হলেন, বাজিদাদপুর গ্রামের বিশ্বাস গ্রুপের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬) ও অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা গ্রুপের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫)। এরা সবাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ছাড়া জগদ্বীশের স্ত্রী ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), সুজন সরকার (৩০), শুক্লা বিশ্বাসসহ (৩৩) বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবরিনা হক বলেন, একটি মারামারির ঘটনায় ১৭ জন হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে সাতজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবু সাইদ (পান্নু) বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করি। দীর্ঘ দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তবে এখন পরিবেশ কিছুটা শান্ত রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে রওয়ানা হয়েছিল, তবে সংঘর্ষ থেমে যাওয়ায় তারা ফিরে এসেছেন। এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জহির হোসেন/এআর/এএমকে