রংপুরে চোর সন্দেহে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় শাহ জালাল (২৯) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার জালাল সয়ার ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের মদন আলীর ছেলে। এ নিয়ে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর আগে গত ১০ আগস্ট রোববার নিহত রূপলাল দাসের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জ বাজারে রূপলাল দাস জুতা সেলাই করতেন। গত ৯ আগস্ট শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া এলাকা থেকে ভাগনে জামাই প্রদীপ দাসকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরই একপর্যায়ে সন্দেহভাজনরা প্রদীপ দাসের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় এবং কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে উত্তেজিত হয়ে রূপলাল ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখান থেকে প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়। পরদিন রোরবার ভোরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রদীপ দাসের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ১০ আগস্ট রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় ৫০০-৭০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই দিন দিবাগত রাতে ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চার জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তারা হলেন- উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বালাপুর এলাকার এবাদত হোসেন (২৭), বুড়িরহাট এলাকার আক্তারুল ইসলাম (৪৫), রফিকুল ইসলাম (৩৩) ও রহিমাপুরের মিজানুর রহমান (২২)। ওই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি, ভিডিও বিশ্লেষণ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্য মিলিয়ে ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত শাহজালালকে সোমবার রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর