মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরলেন অপহৃত ৭ জেলে

সুন্দরবনের দাড়গাং খাল এলাকা থেকে জলদস্যুদের হাতে অপহৃত সাত জেলে মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের পর বাড়ি ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে বিকাশের মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা পরিশোধের পর রাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন— মীরগাং গ্রামের সাকাত সরদারের ছেলে মো. ইব্রাহিম, পারশেখালী গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল হামিদ, টেংরাখালী গ্রামের সুজন মুন্ডার ছেলে সুজিত, কালিনচি গ্রামের কেনা গাজীর ছেলে রকিবুল ইসলাম, কেউবাচলির আব্দুস সাত্তারসহ কালিনচি কলোনিপাড়ার আরও দুজন।
এর আগে গত সোমবার (২৫ আগস্ট) ও মঙ্গলবার সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের দাড়গাং খাল থেকে ছয় সদস্যের একদল জলদস্যু দুটি নৌকাসহ সাত জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহৃত জেলেদের পরিবার থেকে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও পরে অনুনয়-বিনয়ের পর ৩৫ হাজার টাকা করে গ্রহণে রাজি হয় জলদস্যুরা। এভাবে মোট ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং খরচ বাবদ আরও ৫ হাজার টাকা মিলিয়ে আড়াই লাখ টাকা বিকাশে পরিশোধ করা হয়।
আরও পড়ুন
অপহৃত জেলে ইব্রাহিমের চাচা সাহেব আলি জানান, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। এরই মধ্যে জলদস্যুদের হাতে আটক হওয়ায় মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পরিবারগুলোকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ফিরে আসা জেলেদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, জলদস্যুরা নিজেদের ‘কাজল বাহিনী’ পরিচয়ে দাবি করে। একটি ডিঙি নৌকা ও চারটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তারা ছোট বৈকেরী খালে অবস্থান করছিল। মুক্তিপণ নেওয়ার পর তাদের জানিয়ে দিয়েছে, আগামী দুই মাস সুন্দরবনে প্রবেশে আর কোনো টাকা দিতে হবে না।
অপহৃত জেলে সুজিত বলেন, আমাদের মারধর করা হয়নি। তবে শুরুতে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দাবি করলেও পরে ৩৫ হাজার টাকায় ছাড় দেওয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লালটু জানান, জেলেরা বাড়ি ফিরেছেন। তাদের মধ্যে পাঁচ জনের নাম জানা গেলেও অপর দুইজন কালিনচি কলোনিপাড়ার বাসিন্দা।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, অপহরণের বিষয়টি লোকমুখে শোনা গেছে। মৌসুম শুরুর আগে থেকেই স্মার্ট পেট্রোল টিমসহ একাধিক গ্রুপ মাঠে কাজ করছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, জেলেদের ফিরে আসার বিষয়ে কেউ পুলিশকে জানায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
ইব্রাহিম খলিল/এসএসএইচ