১৪ বছরে নেই কোনো উন্নয়ন, অব্যবস্থাপনায় অচল বোদা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র

পঞ্চগড়ের বোদায় উপজেলা প্রশাসনের পরিচালনায় ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে বোদা ডায়াবেটিস ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সাধারণ মানুষের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।
১৪ বছর পার হলেও কেন্দ্রটিতে কোনো উন্নয়ন হয়নি। বরং রোগী সংকট, জনবল ঘাটতি এবং তদারকির অভাবে এখন কার্যত এটি অচল হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১ থেকে ৫ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এমনকি কোনো কোনো মাসে সেবা নিতে আসা সর্বোচ্চ রোগীর সংখ্যা ৭ জন।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে নিয়মিত ডাক্তার থাকেন না। প্যাথলজি টেকনিশিয়ান থাকলেও পরীক্ষার কাজ অনেক সময় অদক্ষ লোক দিয়ে করানো হয়, ফলে চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, টেকনিশিয়ান নিজে হাসপাতালে না থেকে ব্যক্তিগতভাবে দুজনকে নিয়োগ দিয়েছেন পরীক্ষার কাজে।
চিকিৎসা নিতে আসা সোলেমান বলেন, আমরা ভেবেছিলাম কাছে হাসপাতাল আছে বলে সুবিধা পাব। কিন্তু এখানে গেলে ডাক্তার পাওয়া যায় না। টেস্ট করাতে গেলেও বিশেষজ্ঞ নেই। তাই বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক বা জেলা শহরে যেতে হয়।
ফাহিম নামে এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, আমি এখানে সিবিসি (CBC) পরীক্ষা করার জন্য এসেছি। কিন্তু পরীক্ষার জন্য দায়িত্বে থাকা প্যাথলজি টেকনিশিয়ান নিজে রক্ত সংগ্রহ না করে তার নিয়োগপ্রাপ্ত এক নারীকে পাঠান। ওই নারী আমার কাছ থেকে রক্ত নেন। তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি—আপনি কোথায় থেকে নার্সিং পড়েছেন? কিন্তু তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত সন্দেহজনক মনে হয়েছে। একজন রোগীর শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে প্রশিক্ষণহীন লোককে নিয়োগ দেওয়া রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নুর ইসলাম বাবু বলেন, আমি এখানে প্যাথলজি টেকনিশিয়ানের দায়িত্বে রয়েছি। এখানে যারা কাজ করছে তারা শিখছে। তাদের বেতন ইউএনও স্যার প্রদান করেন। তবে ডাক্তার না থাকায় রোগীর সংখ্যা কম আসছে।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। খুব শিগগির বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরকে