আপত্তিকর স্ক্রিনশট ভাইরাল, অধ্যক্ষসহ ৩ শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি

নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে অধ্যক্ষের কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার পাশাপাশি কলেজের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ এনে অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের পদত্যাগ ও পাঁচ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদনান সাকিবসহ আরও অনেকে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- ১. অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ ও অন্যত্র বদলি। ২. কলেজের চলমান অব্যবস্থাপনা তদন্ত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩. শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন। ৪. কলেজ প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ৫. শিক্ষার্থীদের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি নিরপেক্ষ অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল গঠন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে কলেজে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে। ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এরপর অধ্যক্ষের কুরুচিপূর্ণ কথোপকথনের স্ক্রিনশট ভাইরাল হলে আমরা লজ্জিত হই। আমরা চাই, অধ্যক্ষ দ্রুত পদত্যাগ করুন।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, অধ্যক্ষ সামসুল হক, উপাধ্যক্ষ এসএম মোজাফফর হোসেন এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মনিরুজ্জামান বিদ্যুৎ মিলে দুর্নীতির একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তারা সব অনিয়মে জড়িত। মাস দুয়েক আগে আমরা পদত্যাগ দাবি করেছিলাম, কিন্তু তখন আমাদের সন্ত্রাসী ও বহিরাগত বলা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে ইনকোর্স পরীক্ষায় নামমাত্র মার্ক দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা অধ্যক্ষের কাছে দাবি নিয়ে গেলে তিনি প্রথমে বলেন, পদত্যাগ করলে অন্য দাবি পূরণের এখতিয়ার থাকবে না। পরে বলেন, শুধু কয়েকজন শিক্ষার্থীর দাবিতে তিনি পদত্যাগ করবেন না, সকল শিক্ষার্থীর মতামত নেবেন।
আরমান হোসেন আরও বলেন, কথিত স্ক্রিনশটে অধ্যক্ষের বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ ও শিক্ষক হিসেবে অনুপযুক্ত। এ ধরনের মানসিকতার শিক্ষককে শিক্ষকতা পেশায় রাখা যায় না। নারী শিক্ষার্থীরা তার কাছে নিরাপদ নয়। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত তাকে অপসারণ ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হক বলেন, স্ক্রিনশট নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। যারা আন্দোলন করছে, তাদের শিক্ষার্থী হিসেবেই দেখি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমি দায়িত্ব পালন করে যাব।
মনিরুল ইসলাম শামীম/এআরবি