সালিশ বৈঠকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত কমপক্ষে ২৭

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও কমপক্ষে ২৭ জন আহত হয়েছেন। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে।
সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির নাম জাকু মাতুব্বর (৬০)। তিনি আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামের আনোয়ার মাতুব্বরের ছেলে। সংঘর্ষে আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, একটি ভ্যান চুরির ঘটনায় সালিশ বৈঠক চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সোনাখোলা গ্রামের মাতুব্বর ও খান গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্য নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। খান পক্ষের নেতৃত্ব দেন সোনাখোলা গ্রামের শাহজাহান খান (৬৫) এবং মাতুব্বর পক্ষের নেতৃত্ব দেন বাদশা মাতুব্বর (৬৫)। একটি ভ্যান গাড়ি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সোনাখোলা গ্রামের শাহজাহান খানের বাড়ির পাশে সড়কে সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠক চলাকালে প্রথমে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন
নিহত জাকু মাতুব্বরের ভাতিজা বিপ্লব মাতুব্বর বলেন, খান গোষ্ঠীর সালাউদ্দিন খান (২৮) চার-পাঁচ দিন আগে আলগী ইউনিয়নের নলিয়া গ্রাম থেকে একটি ভ্যান চুরি করে। ভ্যানের মালিকসহ ওই গ্রামের লোকজন আমাদের গ্রামের মুরুব্বিদের কাছে বিচার দেয়। আজ বিচার চলাকালে খান গোষ্ঠীর লোকজন আমাদের মাতুব্বর গোষ্ঠীর লোকজনের ওপর আক্রমণ করে। এসময় আমার চাচা জাকু মাতুব্বরকে ইট দিয়ে বুকে আঘাত করে ও মারধর করে। এতে আমার চাচার মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে খান গোষ্ঠীর আহত লোকজন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. তানসিভ জোবায়ের বলেন, জাকু মাতুব্বরকে মৃত অবস্থায় ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। পুলিশ সুরতহাল করেও আঘাতের কোনো চিহ্ন পায়নি।
তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে দুইজন চোখে আঘাত পাওয়ায় গুরুত্ব বিবেচনা করে তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ওই গ্রামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জহির হোসেন/এসএসএইচ