বন্যার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। রোববার (৫ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
দিনভর আতঙ্কে থাকা নদীপাড়ের মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছেন না। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, বিদ্যালয় কিংবা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদিপশু ও গৃহস্থালি সামগ্রী নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৩টার দিকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরপর রাতের দিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে ৫২ দশমিক ৫০ মিটার রেকর্ড করা হয়, যা বিপদসীমার ৫২ দশমিক ১৫ মিটারের চেয়ে ৩৫ সেন্টিমিটার বেশি।
আরও পড়ুন
বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামে। এসব এলাকার শত শত ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, আদিতমারী ও বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন।

পূর্ব ছাতনাই এলাকার বাসিন্দা করিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবার তিস্তার পানি বাড়লেই আমাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। এবারও সব কিছু ডুবে গেছে। ঘুমাতে পারছি না চিন্তায়।
স্থানীয় গৃহবধূ মর্জিনা বেগম বলেন, চারপাশে শুধু পানি আর পানি। ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে। রাতে জিনিসপত্র নিরাপদ জায়গায় নিতে হচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তার পানি বিকেলে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে এবং এখনো বাড়ছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শুকনো খাবার ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে।
এমএসএ