শার্শায় ভ্যানচালক হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধে অচল যান চলাচল

যশোরের শার্শা উপজেলায় পরপর দুই ভ্যানচালক হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় ভ্যান ও রিকশাচালকরা। তারা মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসনের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করেন।
দুপুর ১২টার দিকে শার্শা উপজেলা পরিষদের সামনে এবং নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে শত শত শ্রমজীবী মানুষ জড়ো হয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। পরে তারা যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বেনাপোল স্থলবন্দরমুখী পণ্যবাহী ট্রাকসহ সবধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধ চলাকালে চালকরা হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন শুধু তদন্তের কথা বলছে, কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা বলেন, আমরা প্রতিদিন জীবন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হই, অথচ একের পর এক ভ্যানচালক খুন হলেও প্রশাসন নিশ্চুপ। বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার না হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন
স্থানীয় ভ্যানচালক ইউনিয়নের নেতা আব্দুল কাদের বলেন, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক এখন খুনিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। টহল নেই, নিরাপত্তা নেই। প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই আমাদের ভাইদের লাশ উদ্ধার করতে হচ্ছে।
গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ঝিকরগাছা উপজেলার বায়সা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে নিখোঁজ ভ্যানচালক মাসুদ রানার (২১) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর তিন দিন পর, মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে শার্শার কাজীরবেড় গ্রামে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির স্টিলের বাক্স থেকে উদ্ধার করা হয় আরেক ভ্যানচালক আব্দুল্লাহর (২৫) অর্ধগলিত মরদেহ। এই দুটি হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্ত এলাকার শ্রমজীবী মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, জীবিকার প্রয়োজনে দিনরাত রাস্তায় থাকা এসব দরিদ্র মানুষের জীবন এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানিয়েছেন, দুটি হত্যার ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রেজওয়ান বাপ্পী/এআরবি