নোবিপ্রবিতে ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশ, কর্মকর্তার অশালীন মন্তব্য

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নবগঠিত ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার অশালীন মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর বুধবার নবীন নারী শিক্ষার্থীদের বরণের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান পোস্টের কমেন্টে 'আর নয় গুপ্ত ও পরকীয়া। এবার স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি' মন্তব্য করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও বিএনপি নেতার এমন অশালীন, নারী-বিদ্বেষী ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা সেই কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি।
ইসরাত জাহান নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ শুধু অনৈতিক নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মূল্যবোধ ও পেশাগত নীতির চরম লঙ্ঘন। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নারী-বিদ্বেষী বা অবমাননাকর আচরণে লিপ্ত না হন, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।
আবু সাইদ নামের আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি কোনোভাবেই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার শোভা পায় না। তিনি বিএনপির রাজনীতি করেন। পূর্বেও সামাজিক মাধ্যমে তার অনুরূপ নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে, যা শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ও মর্যাদার জন্য উদ্বেগজনক। নারীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য কখনোই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়, এটি নৈতিক অপরাধ এবং সামাজিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী আচরণ।
অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগ শিকার করেছি। আমার নামে ১৭টি মামলা আছে। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একটা মন্তব্য করেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। তবে এতদিন তারা কোথায় ছিল? কখনো তো তাদের কাউকে দেখি নাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে কিন্তু তিনি কারও কথা শুনেন না। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রায় সবার নামেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। একটা মানুষ ব্যক্তিগত না পরিবর্তন হলে আমরা কিছুই করতে পারি না। তাকে বিষয় গুলো অবহিত করা হলেও তিনি গুরুত্ব দেন না।
হাসিব আল আমিন/এমএএস