বিএনপি নেতা বাচ্চুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির প্রমাণ পায়নি পুলিশ

ময়মনসিংহের ভালুকায় জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার সত্যতা পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মো. ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু।
তিনি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন দাবি করে লিখিত বিবৃতিতে বলেন, আমার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এ কারণে পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কিন্তু অপরাধে জড়িত না থাকা স্বত্বেও আমাকে অন্যায়ভাবে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার করা হচ্ছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দুঃখজনক। মূলত আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক এবং রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য মিথ্যা অপপ্রচার।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে বিএনপি নেতা মো. ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর পাঠানো লিখিত বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা সরেজমিনে দফায় দফায় অনুসন্ধান করেও সত্যতা পায়নি। এরপর মামলার বাদীকে তদন্ত কর্মকর্তা ৩ দফা নোটিশ করলেও প্রমাণ না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এ নিয়ে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফখরউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ভালুকা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। তিনি বিগত সময়ে ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে দলীয় প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিগত ৫ আগস্টের পর জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর দল থেকে বহিষ্কার হন এই বিএনপি নেতা। এ ঘটনার তিন দিন পর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বাদী হয়ে জমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চুসহ ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে ভালুকা মডেল থানায় মামলা করেন। গত ১৬ অক্টোবর ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মহলে গুঞ্জন ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) অঙ্কন সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার এজাহার জেলা পুলিশ সুপারসহ আমরা একাধিকবার সরেজমিনে তদন্ত করেছি। এজাহারে বাটারফ্লাই ম্যানুফেকচারিং কোম্পানিতে চাঁদাবাজির কথা বলা হলেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা চাঁদাবাজির শিকার হননি এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ কোথাও কোনো ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের এ সংক্রান্ত লিখিত ডকুমেন্ট আদালতেও দাখিল আছে। মূলত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মামলার এজাহারে তথ্যগত ভুল থাকায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তবে বাদী চাইলে আদালতে আপত্তি জানাতে পারেন।
একই ধরনের বক্তব্য জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলমের। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নিজেও অভিযোগটি তদন্তে সরেজমিনে গিয়েছি, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। এতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য কাম্য নয়।
আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল প্রসঙ্গে মামলার বাদী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া নেই।
আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর