নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীরা দেখলেন কেউ নেই

কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাদারাসায় নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে দিনভর অপেক্ষা করে পরীক্ষার্থীদের ফিরে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকলেও নিয়োগ বোর্ডের কর্তাদের অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের তবকপুর আবুবকর ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও পরীক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ওই মাদরাসার শুন্য পদে ইবতেদায়ী প্রধান একজন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটর অপারেটর একজন, গবেষনগার-ল্যাব সহকারী পদে এক জন ও আয়া পদে একজন নিয়োগের জন্য গত ১৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৪টি পদের বিপরীতে ৫৮ জন নিয়োগ প্রত্যার্শী বিভিন্ন পদে আবেদন করেন। সেই মোতাবেক আবেদনকারীদের মাদারাসা কর্তৃপক্ষ শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ওই মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে মর্মে অ্যাডমিট কার্ড প্রদান করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলাম ৪টি পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। লেনদেনের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ায় পরীক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে মাদরারাসার অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেন।
সরেজমিনে শনিবার সকালে ওই মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের সব কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আশপাশে কিছুলোক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এ সময় কথা হয় আয়া পদে পরীক্ষা দিতে আসা মোছা. ছকিনা নামের এক পরীক্ষার্থীর সাথে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে অফিসের পিয়ন আমার বাড়িতে অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দেন। আজ (শনিবার) পরীক্ষার জন্য মাদরাসায় ডাকা হয়েছিল। এসে দেখি প্রতিষ্ঠানের সব দরজা তালাবদ্ধ, সংশ্লিষ্ট কেউ নাই। অনেক পরীক্ষার্থী আবার কাউকে না পেয়ে অপেক্ষা করে চলে যাচ্ছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা যদি না নেবে তাহলে আমাদের ডাকার কী দরকার ছিল। একই অভিযোগ করেন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থী রমজানুল ইসলাম ও শামিম মিয়া। এদিকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ওই মাদরাসা চত্বরে অবস্থান করেও নিয়োগ কর্তৃপক্ষ না আসায় হতাশ হয়ে ফিরে যান পরীক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও মাদরাসার অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলাম নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার নিরাপত্তার স্বার্থে মূলত নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। কিন্তু মাদরাসার নোটিশ বোর্ডে পরীক্ষা স্থগিতের কোনো নোটিশ না থাকার কথা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দেননি।
তবকপুর আবুবকর ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার সভাপতি মাওলানা মেনহাজুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষ সাহেব হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এজন্য নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক ও নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধি সামিউল ইসলাম প্রমাণিক জানান, অধ্যক্ষ সাহেব আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন তিনি অসুস্থ। এ কারণে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব না। তাই আমি যাইনি।
মমিনুল ইসলাম বাবু/এমএএস