চাঁপাইনবাবগঞ্জে অসময়ের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ধান ও সবজির খেত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাতভর ভারি বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পাকা ও আধাপাকা ধান এবং শীতকালীন সবজির খেত পানির নিচে তলিয়ে ব্যাপক ফসলহানি ঘটেছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত ১০ বছরে একদিনে এত বৃষ্টির নজির এই জেলায় নেই।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ৯৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৯১ মিলিমিটার। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ২৬০ মিমি, শিবগঞ্জে ১৭৫ মিমি, গোমস্তাপুরে ১৮০ মিমি, নাচোলে ১৭৫ মিমি এবং ভোলাহাটে ১৬৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, আর এক সপ্তাহ পর থেকেই ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তের এই বৃষ্টিতে তাদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের জমিতে ধান পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকদের আশঙ্কা, আগে যেখানে বিঘাপ্রতি ২০ মণ ধান পাওয়ার আশা ছিল, সেখানে এখন ৫ মণের বেশি ফলন নাও হতে পারে।
নাচোলের নেজামপুর এলাকার আমন ধান চাষি আবু সায়েম বলেন, আমার তিন বিঘা জমির ধান পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে প্রায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। বিঘাপ্রতি ২০ মণ ধানের আশা করেছিলাম, এখন হয়তো ৫ মণের বেশি পাব না।
ইসলামপুর এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, গত বছর আলু চাষে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। তাই ভেবেছিলাম এবার আগাম লাগিয়ে ভালো দাম পাব। এক সপ্তাহ আগে দেড় বিঘা জমিতে বীজ রোপণ করেছি, কিন্তু পানিতে ডুবে গাছ ঠিকভাবে উঠছে না। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।
দেবিনগর এলাকার সানাউল্লাহ বলেন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ফুলকপিসহ নানা সবজির গোড়ায় পচন ধরেছে। অসময়ের এই বৃষ্টিতে খরচের টাকাও উঠবে কিনা, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, গত ১০ বছরে একদিনে এত বৃষ্টির রেকর্ড নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এ বৃষ্টিতে জেলার ৪ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে রোপা আমন, সরিষা, শীতকালীন সবজি, পেঁয়াজ, মাসকলাইসহ আরও অনেক ফসল।
আশিক আলী/এআরবি