বিশ্বখ্যাত ১৫ জাতের আম চাষে সফল সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন

চাঁদপুরে পরিত্যক্ত ইটভাটায় কেমিক্যাল ও বিষমুক্ত বিদেশি নানা ফল আর সবজি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন। মাত্র দেড় বছরের মাথায় চাঁদপুরের শাহতলী গ্রামে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে তার পৈতৃক পরিত্যক্ত দুটি ইটভাটায় পরীক্ষামূলকভাবে নানা ধরনের ফল আর সবজি চাষ করে ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রো নামে একটি খামার গড়ে তোলেন তিনি। ইতোমধ্যে সেখানে তিনি বিশ্বখ্যাত ১৫ জাতের আম চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
খামার ঘুরে দেখা গেছে, হেলাল উদ্দিন কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ না নিয়েই শখের বশে তার চাঁদপুরের গ্রামের বাড়ির এই ভাটায় প্রথমে বিদেশি রসালো ফল রকমেলন, মাস্কমেলন চাষ করেন। সফলও হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই সফলতার বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।
এরপর তিনি চাষ করেন ম্যাগলিয়া রোসাসহ দুর্লভ ছয়টি জাতের চেরি টমেটো। সেখানেও তিনি সফলতা পান। একই সঙ্গে গোল্ডেন ইয়েলো ক্যাপসিকামও চাষ করে সফল হন হেলাল উদ্দিন। বর্তমানে তার ইটভাটায় বিশ্বখ্যাত ১৫ জাতের আম চাষ হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে রোপণের দেড় বছরের মাথায় অধিকাংশ আম গাছে এখন শোভা পাচ্ছে নানা রঙের আম। যা দেখতে লোকজন ভিড় করছে।

পরিত্যক্ত ইটভাটায় নানা ধরনের বিদেশি রসালো ফল আর সবজি চাষ করে মাত্র দেড় বছরের মাথায় সফল হওয়া হেলাল উদ্দিন পেশায় সাংবাদিক। তিনি শখের বশে খামার করেছেন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে বাণিজ্যিক চিন্তা করে এ উদ্যোগ নিই। তবে চাষকৃত কোনো পণ্যই আমাকে বাজারজাত করতে হয়নি। লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে আমার চাষকৃত ফল আর সবজি সরাসরি খেত থেকে এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে বিদেশি ফল আর সবজি চাষ দেখভাল করার জন্য সরকারিভাবে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পাওয়া যাচ্ছে না।
ফ্রুটস্ ভ্যালি এগ্রোতে চাষ করা ১৫ জাতের আমের মধ্যে রয়েছে- অস্ট্রেলিয়ান ক্যানসিংটন প্রাইড, কিং অব ম্যাংগো আলফোনসো, বিশ্বের সবচেয়ে দামি এগ অব দ্য সান (সূর্যডিম), কিং অব চাকাপাত, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই, আমেরিকান কেন্ট, কাটিমন, গৌড়মতি, ব্ল্যাকস্টোন, থ্রিটেস্ট, নামডকমাই, ব্যানানা ম্যাংগো, অস্ট্রেলিয়ান হানিগোল্ড এবং ম্যাক্সিকোর আনকমন আটাফালফ ম্যাংগো।

হেলাল উদ্দিন বলেন, মাত্র দেড় বছর বয়সী গ্রাফটিং গাছে সফল ফলন হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে এদেশের আবহাওয়ায় বিশ্বখ্যাত এসব আম বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা যাবে। আশা করছি ফ্রুটস্ ভ্যালির মাধ্যমে সারাদেশেই এসব উন্নত জাতের আম ছড়িয়ে পড়বে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রো নামের খামারটিকে সহায়তা করে আসছি। ইতোমধ্যে চাঁদপুরের এই পরিত্যক্ত ইটভাটায় নানা রাসালো ফল আর সবজি চাষে ব্যাপক সফলতা এসছে। এ কাজে সর্বদা আমাদের সহযোগিতা ছিল এবং থাকবে।
শরীফুল ইসলাম/আরএআর