৮ মাস ধরে ডেঙ্গু আতঙ্কে বরগুনা, আক্রান্ত ছাড়াল ৯ হাজার

বরগুনায় গত ৮ মাস ধরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। বছরের শুরুতে বরগুনায় দেশের সর্বাধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় হটস্পট ঘোষিত এ জেলায় এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ২৯ জন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১০২ জন রোগী।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন। বর্তমানে এ হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৫ জন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে আরও ১৪ জন আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে আমতলীতে ২ জন, বামনায় ও বেতাগীতে ৩ জন করে ৬ জন এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া জেনারেলের হাসপাতাল বাদে জেলার বাকি পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বছর জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৯ হাজার ২৯ জন। এদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ হাজার ৯২৭ জন। আক্রান্ত এসব রোগীদের মধ্যে শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৪৪ জন। এবং বাকি পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও ১ হাজার ৯৮৫ জন আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গু আক্রান্ত এবং মৃত্যুর দিক থেকে সদর উপজেলার পর পাথরঘাটা উপজেলার অবস্থান দ্বিতীয়। এ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯১০ জন। এদের মধ্যে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। এছাড়া বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন এবং আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক জনসহ সরকারি হিসেবে জেলায় মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মার্চ মসে বরগুনায় ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা হওয়ার পর বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকার তুলনায় আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। এতসংখ্যক রোগী আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বেসরকারী হিসেবে জেলায় অন্তত ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পৌরসভার সহযোগিতায় আমাদের কম সংখ্যক জনবল থাকলেও পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। তা নাহলে মৃত্যুর সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারতো। তবে ডেঙ্গু একেবারে নির্মুল হবে না, আশা করি সকলের সচেতনতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
আব্দুল আলীম/আরকে