ভুয়া কাগজপত্রে টেন্ডার, কালিয়াকৈর পৌরসভায় দুদকের অভিযান

ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে টেন্ডারের দাখিলের অভিযোগে গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভায়
অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় বিভিন্ন প্রকল্পের কাগজপত্র যাচাই এবং সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে জেলার কালিয়াকৈর পৌরসভার কার্যালয়ে অভিযান চালায় গাজীপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই কাজটি I U G P প্রকল্পের ৪র্থ প্যাকেজের অধীনে হাইটেক সিটি সড়ক, আনসার ভিডিপি অ্যাকাডেমির ভেতরের সড়ক, আনসার অ্যাকাডেমির ৩ নং গেইটের বিপরীতে সড়ক ও ড্রেন, পৌরসভার পাশা গেইট এলাকার সড়ক, এপেক্স ওয়েভিং সড়ক, কুহিনূর স মিলের সড়ক, টান কালিয়াকৈর লালটেকি এলাকায় ড্রেনসহ দুটি রাস্তা নির্মাণে মোট ১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকায় একটি কাজ বাগিয়ে নেয় ঠিকাদার।
অভিযোগ রয়েছে কোনো যাচাই বাছাই না করেই কাজটি দিয়েছিলেন মেয়র মজিবুর রহমান। দরপত্র আহ্বান ও কার্যালয় প্রদানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দিয়ে অনিয়মের করে তৃতীয় দরদাতাকে (ব্রাউন ফিল্ড) কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
এমন একটি অভিযোগ পেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন। বিষয়টি আমলে নিয়ে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কাজ পরিদর্শন করেন তারা। পরে পৌরসভা থেকে টেন্ডার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন কার্যালয়ে। এ সময় পৌরসভার কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর পায়নি দুদক।
দুর্নীতি দমন কমিশনের গাজীপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেন, কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রকল্পে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে এমন একটি অভিযোগ আমরা পাই। পরে সেখানে আমাদের টিম অভিযান চালায়৷ এ সময় পৌরসভায় থেকে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এবং সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোন একাধিক বার ফোনকল করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কালিয়াকৈর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পৌরসভার একটি প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ে এক ঠিকাদার দুদকে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগে বলেছেন ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে টেন্ডার জমা দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগ পেয়ে দুদক অভিযান করেছে।
প্রসঙ্গত, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে পৌরসভার সাবেক মেয়র মজিবুর রহমানকে ২০২৫ সালের ৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনে তলব করেন। এ সময় অভিযোগ উঠে, পৌরসভায় একক টেন্ডার বাণিজ্য, ভুয়া ড্রেনেজ ব্যবস্থার নামে প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি টাকা লোপাট, পৌরসভায় জনবল নিয়োগে অনিয়ম, পৌর এলাকায় অনিয়মিতান্ত্রিকভাবে পরিবহন খাত থেকে টোল আদায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবর দখল থেকে শুরু করে নানা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি।
আশিকুর রহমান/এমএন