শীতের আগমনী বার্তা, গরম কাপড়ের দোকানে ভিড়

চারদিকে হালকা কুয়াশা আর ঘাসের ওপর ঝরে পড়া শিশির জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমন। প্রবাদ আছে উনো বর্ষায় দুনো শীত, অর্থাৎ যে বছর বৃষ্টি কম হয়, সে বছর শীতও বেশি পড়ে। বাংলার ষড়ঋতুর রঙমঞ্চে শীতের অবস্থান বরাবরই অনন্য। হেমন্তের সোনালি আভা আর হিমেল হাওয়ার পরশে প্রকৃতি ইতিমধ্যেই শীতের বার্তা পেয়েছে।
মৃদু রোদের উষ্ণতা সঙ্গী করে যখন শীত ধীরে ধীরে নামছে, তখনই শীতের পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। নতুন পোশাকের দোকানের চেয়ে পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতেই বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) মাগুরার শালিখার আড়পাড়া ও শ্রীপুর উপজেলার ওয়াপদা এলাকার পুরোনো কাপড়ের দোকান ঘুরে দেখা গেছে এমনই এক চিত্র।
বাজারের পুরোনো কাপড়ের দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট, চাদর, মাফলার, টুপি, হাতমোজা-পামোজাসহ নানা শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে সুলভ দামে। স্বল্প আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও ভিড় করছেন এসব দোকানে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে একটি মাফলার ১৫০ টাকা, জ্যাকেট ৩০০ টাকা, চাদর ৩০০ টাকা, সোয়েটার ৩০০ টাকা এবং হাতমোজা বা পামোজা ২০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বড়পাড়া নিক্সন মার্কেটের বিক্রেতা শাহাদাত হোসেন ও আব্দুর সাত্তার বলেন, আমরা মাগুরা, যশোর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায় কাপড় সরবরাহ করি। ক্রয়ের সময় যে দামে পাই, সেই অনুযায়ী বিক্রি করি। এ বছর শীত একটু আগেই শুরু হওয়ায় ক্রেতার ভিড় বেশি, তাই দামও কিছুটা বেশি।
শীতবস্ত্র কিনতে আসা ক্রেতা জসীম উদ্দিন বলেন, গত বছর মাফলার কিনেছিলাম, এবার জ্যাকেট ও ট্রাউজার কিনতে এসেছি। তবে আগের বছরের তুলনায় দাম একটু বেড়েছে।
অন্য এক ক্রেতা ফিরোজ হোসেন বলেন, নতুন কাপড়ের দোকানের চেয়ে এখানে ভালো মানের কাপড় তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। তাই প্রতিবছরই এই বাজারে আসি।
শ্রীপুরের ওয়াপদা বাজারে শীতবস্ত্র কিনতে আসা ইজিবাইকচালক রহিম শেখ জানান, রাতে ইজিবাইক চালাতে গেলে খুব ঠান্ডা লাগে। আমরা গরিব মানুষ, তাই এখানে এসে অল্প দামে শীতের পোশাক কিনেছি। আমাদের মতো আরও অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ এখান থেকে কাপড় নিচ্ছে।
শালিখার আড়পাড়ায় প্রতি বুধবার ও শনিবার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে এই পুরোনো কাপড়ের বাজার। এখানে শুধু ব্যবহৃত কাপড়ই নয়, নতুন পোশাকও পাওয়া যায়। উপজেলার শতখালী, ধনেশ্বরগাতী, তালখড়ি ও আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মানুষ আসেন এই বাজারে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে যদি পুরোনো কাপড়ের বাজারগুলোকে আরও সুশৃঙ্খলভাবে ও বড় পরিসরে সাজানো যায়, তাহলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষেরা স্বল্পমূল্যে মানসম্মত শীতবস্ত্র কেনার আরও ভালো সুযোগ পাবে।
তাছিন জামান/এআরবি