সুন্দরবনে আবারও জেলের মৃত্যু, ছয় মাসে প্রাণ গেছে তিনজনের

পশ্চিম সুন্দরবন আবারও শোকাচ্ছন্ন এক জেলের মৃত্যুর খবরে। কুকোমারি খালের মাঝনদীতে জাল ফেলতে গিয়ে হঠাৎ বুকে তীব্র ব্যথা মুহূর্তেই থেমে গেল আব্দুস সাত্তার গাজীর (৫৫) জীবন। সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা স্থানীয় জেলে ও বনজীবীদের মধ্যে গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী গ্রামের মরহুম বক্স গাজীর ছেলে সাত্তার দীর্ঘদিন ধরে পেশাদার জেলে হিসেবে কাজ করতেন। গত ১২ নভেম্বর তিনি তিনজন সহযোগীকে নিয়ে কদমতলা স্টেশন থেকে পাশ কেটে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছিলেন।
সহযোগী জেলে খানজাহান আলী বলেন, জাল ফেলতে ফেলতেই হঠাৎ চিৎকার করে বুক চেপে ধরলেন সাত্তার ভাই। আমাদের ধরতে বলেই নৌকার ভেতর লুটিয়ে পড়লেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল।
মঙ্গলবার গভীর রাতে সহযোগীরা মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। নিহতের দুই ছেলে রাহুল ও বাবুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তাদের বাবার মৃত্যু হৃদরোগজনিত কারণে। তাদের অভিযোগ, বনে কোনো চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় এমন ঘটনা বাড়ছে। টহলফাঁড়িগুলোতে জরুরি ওষুধ থাকা খুব জরুরি।
বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে সাতক্ষীরা রেঞ্জে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিন জেলের মৃত্যু হয়েছে মার্চে হরিপদ গাইন, সেপ্টেম্বরে খলিলুর রহমান, আর সর্বশেষ আব্দুস সাত্তার গাজী।
কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। সহযোগীরা রাতে মরদেহ নিয়ে এসেছে। তবে এ ধরনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে বনবিভাগের আর্থিক সহায়তার কোনো বিধান নেই।
দিন দিন সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া ধরতে যাওয়া জেলেদের ঝুঁকি বাড়ছে। কিন্তু জরুরি চিকিৎসা সুবিধা কিংবা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় প্রতিটি মৃত্যু যেন কেবল সংখ্যায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে।
ইব্রাহিম খলিল/এআরবি