কর্তৃপক্ষের অবহেলায় স্বপ্ন ভঙ্গ ১০ শিক্ষার্থীর!

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির অন্তত ১০ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ প্রস্তুতির পরও শেষ মুহূর্তে রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে মাহমুদা আক্তার শিল্পী নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন। এর আগে তিনি এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিভাবকরা জানান, প্রায় এক দশক পর বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে—এ কারণে কয়েক মাস ধরে তারা মেয়েদের প্রস্তুত করিয়ে আসছিলেন। শ্রেণি শিক্ষক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের নাম সংগ্রহ করলেও বিদ্যালয় অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করেনি। বিষয়টি জানতে পারেন নিবন্ধনের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর।
লিখিত অভিযোগে মাহামুদা আক্তার শিল্পী বলেন, বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত পত্র বিদ্যালয়ে পৌঁছালেও প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষক কেউ অভিভাবকদের এ বিষয়ে কিছু জানাননি। নোটিশ বোর্ডে কিংবা শ্রেণিকক্ষেও কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি প্রধান শিক্ষককে ফোন করলে তিনি রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও আর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
আব্দুল মালেক মালেক নামে আরেক অভিভাবক বলেন, ‘এ পরীক্ষার জন্য মেয়েরা অতিরিক্ত কোচিং করেছে, বই কিনেছে। অথচ একটি অব্যবস্থাপনার কারণে অংশ নিতে পারল না। এর জবাবদিহি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই করতে হবে।’
অভিভাবক পারভিন বেগমের অভিযোগ, ‘আমার মেয়ে নিয়মিত পড়ালেখা করে। আগেও বৃত্তি পেয়েছে। এবারও ভালো ফল করবে বলে আশা ছিল। কিন্তু তাদের ভুলে মেয়ের ভবিষ্যতের একটা বড় সুযোগ নষ্ট হলো।’
বঞ্চিত শিক্ষার্থী জান্নাতী বলে, ‘আমরা তো জানতাম না রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। আগে কোনো কিছু হলে ক্লাসে নোটিশ পড়ে শোনানো হতো। এবার সেটা করা হয়নি। খুব কষ্ট লাগছে।’ একই অভিজ্ঞতার কথা জানায় মুশফিরাত, জিসা, তানসির, রোশনি, আরোবী, ইমা ও রুমাইয়া।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অফিস সহকারীকে নোটিশ দিতে বলেছিলাম, পরে আর দেয়া হয়নি। নিবন্ধনের সময়ও খুব কম ছিল। আমি বোর্ডে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম শেখ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ভুল স্বীকার করেছেন। সময়মতো অভিভাবকদের ফোন করলেও বিষয়টি জানানো যেত। এ জায়গায় তাদের গাফিলতি আছে।’
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান জানান, এক অভিভাবক অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘২০–২৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলেছে। ওই বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এখন নিবন্ধন খোলা সম্ভব নয়।’
রিপন আকন্দ/আরকে