লক্ষ্মীপুরে চা চক্রে বিএনপি-জামায়াতের দুই এমপি প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশের মতো লক্ষ্মীপুরেও ভোটের আমেজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের বিএনপি ও জামায়াতের দুই প্রার্থীর যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। কেন্দ্রীয় এই দুই নেতা কেন্দ্রের সভা-সেমিনার সামলিয়ে এলাকায় এসে গ্রামে গ্রামে ঘুরে জনসংযোগ ও উঠান বৈঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্তই তাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রচারণায় দেখা যায়।
এদিকে উঠান বৈঠক বা সমাবেশে ভোট চাইতে গিয়ে কোন না কোনভাবে দুই প্রার্থী একে অপরকে কিংবা দলের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তাদের এসব বক্তব্য ঘিরে কর্মী সমর্থকরা ফেসবুকে তুমুল সমালোচনায় মেতে উঠেন। এমন সমালোচনা বা ক্ষোভ ফেসবুক পর্যন্তই যেন থাকে সে প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
অন্যদিকে উঠান বৈঠক বা সমাবেশে যে যাই বলুক চা চক্রে বা এক টেবিলে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর সম্পর্ককে রাজনৈতিক সৌন্দর্য আখ্যায়িত করছেন সচেতন মহল। আবার যারা ফেসবুকে সমালোচনা করেন তারাও বিষয়টিকে একইভাবে দেখছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত একটি ওয়াজ মাহফিলে অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারী ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম। সেখানেই তাৎক্ষণিক স্থানীয় একটি কার্যালয়ে তারা একটেবিলে চা চক্রে মিলিত হন। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন দৃশ্যকে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন।
ভিডিওতে ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে বলতে শোনা যায়, রেজাউল করিম আমার প্রিয় ভাই। এটা ফ্যাসিস্টের লড়াই না৷ বন্ধুত্বের লড়াই, গণতন্ত্রের লড়াই।
ভিডিওতে দেখা যায় শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে সম্বোধন করে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী রেজাউল করিম বলছেন, “চট্টগ্রাম থেকে ডান্ডাবেড়ি পড়িয়ে আমিসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সহ-সভাপতিকে এক রশিতে বেঁধে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। তখন কুমিল্লায় আমি বললাম আমি আছরের নামাজ পড়বো। তখন আমাকে একটা কলেজে নেওয়া হল। যখন আমি শিবিরের সভাপতি ছিলাম সেইদিন এই কলেজে নবীন বরণে আসলাম। সবাই ফুল দিয়ে আমাকে বরণ করেছে। আর সেদিন হাত পায়ে ডান্ডাবেড়ি নিয়ে কলেজে ঢুকলাম। সবাই আমাকে দেখার জন্য ছুটে এলো। তখন আমি ভাবলাম দৃশ্যটা পাল্টে গেলো।”
রেজাউলের কথাগুলো শুনে এ্যানি আফসোস করে বলেন, “তখন তো অত্যাচারের শেষ ছিলো না।”
চা চক্রে জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ ও জামায়াতের লক্ষ্মীপুর শহরের আমীর আবুল ফারাহ নিশানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এসএমডব্লিউ