অন্তঃসত্ত্বা মা-ছেলেকে সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়ে ভারতে হস্তান্তর

কুড়িগ্রামে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন হওয়া ৬ জনের মধ্যে ভারতীয় গর্ভবতী নারী সোনালী খাতুন ও তার ছেলে সাব্বির শেখকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় সোনামসজিদ সীমান্তে শূন্য লাইন দিয়ে মা-ছেলেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তারা হলেন- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাকুরের দানিশ শেখের স্ত্রী সোনালী খাতুন ও তার ছেলে সাব্বির শেখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এছাড়া ভারতের ১১৯ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, সোনালী খাতুন গর্ভবতী হওয়ার কারণে মানবিক দিক বিবেচনা করে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বিএসএফের মাধ্যমে মা-ছেলেকে ভারতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বিএসএফের এই অমানবিক পুশইন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পুশ-ইনের এই কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকটের সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ভারতের দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করার সময় গত ২৬ জুন নারী ও শিশুসহ ওই ছয়জনকে ‘বাংলাদেশি’ দেখিয়ে ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। এরপর তারা প্রায় দুই মাস ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকায় অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। পরে গত ২০ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের আটক করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। এরপর নিজ দেশে ফিরিয়ে ফেরত নেওয়ার কথা জানায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং তাদের একদিন পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ওই ছয়জনের মধ্যে দুইজন শিশু হওয়ায় মামলায় তাদের আসামি করা হয়নি। পরে ১ ডিসেম্বর তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত এবং স্থানীয় জিম্মাদার ফারুক হোসেনের বাড়িতে থাকেন তারা।
মো. আশিক আলী/এমজে