অপহরণের পর সৌদিতে প্রবাসীকে হত্যা, দুই মাস পর মরদেহ উত্তোলন

লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলার তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে দাফনের দুই মাস পর মহসিন কবির নামে এক সৌদি প্রবাসীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মতলবপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। সৌদি আরবেই তাকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত চলছে।
মরদেহ উত্তোলনের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাশ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেনের উপস্থিত ছিলেন। মৃত মহসিন সদর মতলবপুর গ্রামের মাওলানা মো. নুরুল্লাহ’র ছেলে।
পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর মহসিন একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরির উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। সেখানে তার মালিক মোরশেদ আলমের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিয়ে তার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন তাদের দ্বন্দ্ব চলে। এর মধ্যেই চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মহসিন সেখানে অপহরণের শিকার হয়। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ ছিল। ঘটনার কয়েকদিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর মহসিনের মরদেহ দেশে আসে। মরদেহ গ্রহণের সময়ই পরিবার সন্দেহ করে মহসিনের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। তাকে পরিল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করে পরিবার। পরে ২২ অক্টোবর নিহতের স্ত্রী রওশন আক্তার বাদী হয়ে মোরশেদ আলমসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত মোরশেদ সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের হাসন্দি এলাকার বলের বাড়ির মৃত সিরাজ উল্যার ছেলে। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মোরশেদের স্ত্রী রোকসানা আক্তার, আত্মীয় মো. হাছিব, মো. রায়হান। তারা হাসন্দি এলাকার বাসিন্দা।
প্রতিবেশী আবু সাঈদ বলেন, মহসিন যার কাছে সৌদি গেছে সেই তাকে অপহরণ করে অন্যান্যদের দিয়ে হত্যা করিয়েছে। তার স্বাভাবিক মৃত্যুর যে ময়নাতদন্ত দিয়েছে তাতে আমাদের সন্দেহ হয়েছে। পরিবারের লোকজন, সৌদিতে থাকা স্বজন ও বাংলাদেশ দূতাবাসকে না জানিয়েই দেশে লাশ পাঠিয়ে দিয়েছে। এজন্য আমাদের সন্দেহ মোরশেদই খুনী। এজন্য আমরা মামলা করিয়েছি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভি দাশ বলেন, মামলার তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে মহসিনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ ফের দাফন করা হবে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
হাসান মাহমুদ/আরকে