সিরাজগঞ্জে জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, আহত ১৫

সিরাজগঞ্জে ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপির তিন দফা হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে কাজীপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়িতে অবস্থিত মেফতাউল উলুম কওমিয়া মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদর আংশিক) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা। একই মাহফিলে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহিনুর আলম।
জেলা জামায়াতের অভিযোগ, ওয়াজ মাহফিল চলাকালে মঞ্চে প্রথম দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বক্তৃতা শেষে জামায়াতের আমির রাস্তায় বের হলে দ্বিতীয় দফা হামলা চালানো হয়। সর্বশেষ সোনামুখী বাজারের চৌরাস্তায় তৃতীয় দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াতের নেতাকর্মীদের দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
হামলায় আহতদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে তিনজন, বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন ভর্তি হন এবং ৮ থেকে ১০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনার বিষয়ে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি ইসলামী জালসা কোনো রাজনৈতিক মঞ্চ নয়৷ শাহীনুর সাহেবের লোকজন স্লোগান দিতে দিতে মিছিল আকারে মঞ্চের দিকে আসে। এটা স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাভাবিকভাবে নেননি, তাই ঝামেলা হয়েছিল৷ আমি নিজেই আধাঘণ্টা কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে বাড়িতে চলে আসি৷ আর একটা ছেলেকে যে মারার কথা বলা হয়েছে, সেই ছেলেটা জামায়াতের কেউ না, সে আওয়ামী লীগ করে। আমার দলীয় কর্মীরা কেউ কিছু করেনি, যা করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা৷ আমাদের ওপর এভাবে অভিযোগ দিয়ে কাজটা ঠিক করেনি৷
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহিনুর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মঞ্চের হামলার সময় বিএনপির সেলিম রেজা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় হামলার বিষয়ে আমি সেলিম রেজাকে ফোন করলে, সে বলে আমি সব নেতাকর্মী নিয়ে চলে আসছি। আমি বললাম, মঞ্চে যারা গন্ডগোল করেছে, এরাই সেই লোক। সে উত্তরে বলল, ঠিক আছে আমি দেখতেছি। তারপর সে আমাকে আর কিছু জানায়নি৷ তখন পরিষ্কার হলো তার ইন্ধনেই এসব হয়েছে। তৃতীয়বার পুলিশকে আমি জানালে, পুলিশ এসে ঘুরে গেছে।
এ বিষয়ে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েতুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, থানায় কোনো অভিযোগ নেই। টেলিফোনে জামায়াতের আমির অভিযোগ জানানোর পরে পুলিশ তাৎক্ষণিক উপস্থিত হন। এক মাহফিলে দুজনই অতিথি ছিলেন৷ ওইখানে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পরে রাস্তায় আবার দুই পক্ষের দেখা হয়। তখন একটা ছেলের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। সে সময় জামায়াতের একটা ছেলের মোটরসাইকেলের মিটার ভেঙে গেছে।
মো. নাজমুল হাসান/এএমকে