বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রোকেয়ার অস্তিত্ব নেই

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামে প্রতিষ্ঠিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। তবে তার নামে করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নেই তার স্মৃতি ধারণকারী কোনো স্থায়ী স্থাপনা। নেই ম্যুরাল, নেই স্থায়ী প্রতিকৃতি।
প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পেরিয়ে ১৮ তম বছরে পা রাখলেও নামের সঙ্গে কাজের নেই সামঞ্জস্য। বর্তমানে উত্তরবঙ্গসহ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ পর্যন্ত বেগম রোকেয়ার স্মৃতি সংরক্ষণে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো নয়।
প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর ‘রোকেয়া দিবস’ এলেই তার নিজ নামের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তার চিন্তা, দর্শন, সমাজ-সংস্কার কিংবা নারীমুক্তি আন্দোলন নিয়ে স্থায়ী গবেষণা বা পাঠক্রমীক উদ্যোগ নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু নামেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী লাবনী সরকার বলেন, রোকেয়া শুধু নাম নয়, তার চিন্তাধারা ও কর্ম আমাদের শিক্ষার অংশ হওয়া উচিত। আমাদের প্রত্যাশা, বিশ্ববিদ্যালয় তার নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে রোকেয়ার জীবন, সাহিত্য ও নারী জাগরণের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া জিম বলেন, বেগম রোকেয়ার নামেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়। কিন্তু ক্যাম্পাসে তার কোনো স্থায়ী স্মৃতিচিহ্ন নেই, নেই প্রতিকৃতি বা ম্যুরাল। শুধু দিবসে অস্থায়ী প্রতিকৃতি বানানোই যথেষ্ট নয়।
শিক্ষার্থী তানজিম তাফায়েমুম বলেন, বিভিন্ন দিবসে অস্থায়ীভাবে রোকেয়ার প্রতিকৃতি বানানো হয়, কিন্তু এ ধরণের কাজ যথেষ্ট নয়। শিক্ষার্থীরা রোকেয়ার নামটি উচ্চারণ করে, কিন্তু তার অবদান দেখার মতো কিছু নেই। অস্থায়ী প্রতিকৃতি যথেষ্ট নয়, আমরা চাই ক্যাম্পাসে স্থায়ী ম্যুরাল বা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন হোক, যেন তার জীবন ও কর্মের শিক্ষা সবসময় চোখে পড়ে।
বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এখানে তার স্মৃতিচিহ্ন থাকা অবশ্যই প্রয়োজন আছে এবং এসব নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন চলছে। খুব দ্রুতই সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।
আরকে