‘আমি গর্ত পার হয়ে গেছি, বাচ্চা পা দিছে আর চলে গেছে’

“আমি গর্ত পার হয়ে চলে গেছি, বাচ্চা খেয়াল করেনি। পা দিছে আর চলে গেছে”— এমনভাবে কথাগুলো বলছিলেন ৩০ ফুট গর্তে পড়া শিশু স্বাধীনের মা রুনা খাতুন। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী ওই শিশুটি।
শিশুটির মা রুনা খাতুন বলেন, “ট্রলিতে (পাওয়ার টিলার) আমাদের মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় কাঁদা মাটিতে ট্রলিটি আটকে গিয়েছিল। ট্রলি আটকে গেছে দেখে তার দাদা কোদাল নিয়ে আসছে সেখানে। পরে বাচ্চাকে বলছি, ‘চলো আব্বু ওখানে যাই ট্রলি পুঁতে গেছে’। বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আসছিলাম, পরে সে নেমে যায়। গর্তের ওপর খড় দেওয়া ছিল, বোঝা যাচ্ছে না। আমি গর্ত পার হয়ে চলে গেছি। আর ওই বাচ্চা খেয়াল করেনি। পা দিছে আর সাথে সাথে গর্তের ভেতরে চলে গেছে।”
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপটিতে শিশুটি পড়ে গেলেও রাত সোয়া ১০ টা পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শিশুটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সদর স্টেশনের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। গর্তের পাশে স্কেভেটর দিয়ে মাটি খননের কাজ চলছে। উদ্ধার অভিযান দেখতে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছে। তাদের সরাতে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, “উদ্ধার অভিযান চলছে। আমরা শিশুটিকে দেখতে পাইনি। গভীরে ক্যামেরা পাঠিয়েও তাকে দেখা যায়নি। আমরা তাকে অক্ষতভাবে উদ্ধার করতে চাই। সে বেঁচে আছে কিনা সেটাও সন্দেহ। আমরা চাই তাকে অক্ষতভাবে উদ্ধার করি। আসা করছি-দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করতে পারব তাকে।”
এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাইমা খান বলেন, “ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ করছে। উদ্ধার কাজ চলমান আছে। ইনশাআল্লাহ আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হব।”
শাহিনুল আশিক/এমটিআই