৩২ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি শিশু সাজিদের, হাল ছাড়ছে না ফায়ার সার্ভিস

রাজশাহী তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে উদ্ধারে ৩২ ঘণ্টা ধরে অভিযান চললেও এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে শিশুটিকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে শিশুটি গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট। এছাড়া তিনটি এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খনন করা হচ্ছে।
রাতে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ৪০ ফুট পর্যন্ত মাটি খনন করেও ভিকটিমকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, তবে হাল না ছেড়ে আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে উদ্ধারকারী দল। বর্তমানে তিনটি এক্সকেভেটর দিয়ে একসঙ্গে মাটি খননের কাজ চলছে। মাটির গঠন ঠিক রেখে এবং ধস ঠেকাতে চারপাশ থেকে স্লোপ বা ঢালু করে গর্তটি বড় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৪০ ফুট গভীরে গিয়েছি, কিন্তু ভিকটিমকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী পাইপটি প্রায় ৯০ ফুট গভীর হতে পারে। দীর্ঘদিনের পুরোনো হওয়ায় এটি কিছুটা ভরাট হয়ে থাকতে পারে, তবে তা ৪০ ফুটের কম নয়। তাই আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে।
তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উদ্ধারকাজে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাটির প্রকৃতি এবং পানি। নিচের মাটি দোআঁশ ও এঁটেল প্রকৃতির হওয়ায় এবং পানির স্তর কাছাকাছি থাকায় পানি উঠে আসার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগে স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টা করায় ভিকটিমের ওপর মাটি ও খড়কুটো পড়ে গেছে। এ কারণে সার্চ ভিশন ক্যামেরা দিয়েও ভিকটিমকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, উদ্ধারকারীরা এখন ১০ ফুট করে মাটি খনন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কৌশল নিয়েছেন। এক্সকেভেটর ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট কম্পনে (ভাইব্রেশন) ভিকটিম আরও নিচে পড়ে যেতে পারে— এমন আশঙ্কায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি। মূল গর্ত থেকে অন্তত ১০-১৫ ফুট দূর থেকে এক্সকেভেটরগুলো কাজ করছে। তবে ভিকটিমের ওপর আগেই প্রচুর মাটি চাপা পড়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।
শিশুটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে কি-না জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, আপনারা যা ধারণা করছেন, আমরাও সেটা ধারণা করছি। এখন আল্লাহ চাইলে সবকিছু হতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা এখনই হাল ছাড়ছি না। ১০ ফুট করে নিচে নামব এবং ম্যানুয়ালিও চেষ্টা করা হবে যাতে মাটি ধসে না পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন, বিশেষজ্ঞ এবং বড় বড় রেসকিউয়ারদের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভিকটিমকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।
আরএআর