ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ, মাস্ক পরে মোটরসাইকেল শোডাউন

মাদারীপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর গাছ ফেলে অবরোধ করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় মুখে মাস্ক পড়ে মোটরসাইকেল শোডাউন ও বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে জেলার সদর উপজেলার সমাদ্দার থেকে মস্তফাপুর বড় ব্রিজের মধ্যবর্তী ৩টি স্থানে গাছ ফেলে এ অবরোধ করা হয়। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ মহাসড়কে আটকে যায় দূরপাল্লার যানবাহন। যানজট সৃষ্টি হলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রী ও চালকরা। পরে সকাল ৭টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখান করার দাবিতে আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি সফল করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ভোররাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সমাদ্দার, কলাবাড়ি এবং ঘটকচর ও মস্তফাপুর বড়ব্রিজের মাঝামাঝি অন্তত ৩টি স্থানে ৮ থেকে ৯ গাছ ফেলে অবরোধ করা হয়। এ সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দিনের প্রথম প্রহরেই ভোগান্তিতে পড়ে দূর-দূরান্তের যাত্রী ও চালকরা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তারা এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সড়ক থেকে গাছগুলো অপসারণ করেন এবং সকাল ৭টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছ। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মহাসড়ক অবরোধ করে মোটরসাইকেল শোডাউন ও বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বেশ কিছু নেতাকর্মী ‘নেত্রী আছে, কোন সে নেত্রী, শেখ হাসিনা।’ ‘সবাই বলো শেখ হাসিনা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’-সহ নানান স্লোগান দেন। তাদের মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ছিল।
বিক্ষোভ শেষে শফিক খানকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে তিনি বলেন, আজকে তারা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চান। এই নির্বাচন বাঙ্গালী মানবে না, মানে না। আজকে মাদারীপুর-রাজৈর-বরিশালে কোন গাড়ি চলবে না। আমরা শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো কিছু চিনি না, কিছু মানি না, মানব না।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে সমাদ্দার এলাকায় গিয়ে ৫টি গাছ অপসারণ করি। পরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। আমরা প্রায় এক ঘণ্টার মতো কাজ করেছি। এছাড়া আরও দুইটি স্থানে ৩/৪টি গাছ ফেলা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো ছোট হওয়ায় স্থানীয়রা সরিয়ে দেয়। আমরা ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে স্টেশন থেকে বের হয়েছি এবং সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আবার কাজ শেষে ফিরে এসেছি।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোররাতে মহাসড়কে কয়েকটি গাছ ফেলেছিল দুষ্কৃতকারীরা। পরে পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যায়। এসময় দ্রুত সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। গাছ অপসারণ করতে বেশি সময় লাগেনি। অল্প কিছুক্ষণ গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল।
আকাশ আহম্মেদ/আরকে