চালুর আগে ‘পারমাণবিক বাস’ নিয়ে রূপপুর প্রকল্পের প্রচারাভিযান

ফুয়েল লোডিংয়ের প্রারম্ভে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে মাসব্যাপী ব্যাপক প্রচারণামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই কর্মসূচি আওতায় রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঈশ্বরদী শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর, উঠান বৈঠক ও কুইজ প্রতিযোগিতাসহ ব্যতিক্রম সব কর্মসূচি। আগামী ২০ ডিসেম্বর ’গম্ভীরা পরিবেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সচেতনতামূলক সরাসরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রাশিয়ার রসাটম এ কার্যক্রমের আয়োজন করেছে।
রোববার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট (গণমাধ্যম) ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক তথ্য কর্মকর্তা সৈকত আহমেদের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ কর্মসূচির আওতায় নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক আয়োজন ’গম্ভীরা’ ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়মূলক কার্যক্রম এবং ’উঠান বৈঠক’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আরও জানানো হয়, দেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ সমগ্র জাতির জন্য গর্বের প্রতীক। বিশেষত পাবনাবাসীর জন্য এ প্রকল্পের গুরুত্ব আরও বেশি। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই প্রকল্পকে ঘিরে নানা প্রশ্ন, ভুল ধারণা, উদ্বেগ ও কৌতূহল নিরসনে প্রকল্প সম্পর্কে সহজ, স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রোসাটম যৌথভাবে নিউক্লিয়ার বাস ট্যুর আয়োজন করেছে। এ বাস ট্যুরের মাধ্যমে জেলার সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত এবং আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। পারমাণবিক তথ্যকেন্দ্র, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে পারমাণবিক প্রযুক্তি বিষয়ক বিতর্ক ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্ক অনুষ্ঠানে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও রোসাটমের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, চলতি মাসে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ’গম্ভীরা: স্বপ্ন পূরণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে একাধিক উঠান বৈঠক। ’টেকসই, নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ মূলভাবের ওপর নির্মিত এ গম্ভীরা স্থানীয় জনসাধারণকে বিনোদন ও যুক্তির মাধ্যমে রূপপুরের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরবে। ’উঠান বৈঠক’ স্থানীয় মানুষকে রূপপুর সম্পর্কে অবগত, সচেতন করা বা তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক ও তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদান করে তাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষে ইতিবাচক জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে আশা করা হয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশিয়ার রোসাটম বিশ্বাস করে, ধারাবাহিক ও অংশগ্রহণমূলক জনসচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে এবং দেশের টেকসই উন্নয়নে এ প্রকল্পের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে।
এ অবস্থায় ফুয়েল লোডিংয়ের মধ্য দিয়ে অতি শিগগিরই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে যা জাতীয় গ্রিডে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করবে।
রাকিব হাসনাত/এএমকে