মান্না ও ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক এলাকায় অবস্থিত আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের পলাতক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) নাম ব্যবহার করে ভুয়া বোর্ড সভা দেখানো, জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে রেজুলেশন তৈরি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অমান্য করে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বগুড়ার অবকাশকালীন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দায়ের করা হয়।
মামলায় ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান ড. এম জুবায়দুর রহমান, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খানসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও রয়েছেন। গত ১১ ডিসেম্বর শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ও মেসার্স মিল্লাত ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিল্লাত হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল ওহাব জানান, আদালতের বিচারক সিনিয়র স্পেশাল জজ শাহজাহান কবির মামলাটি আমলে নিয়ে প্রাথমিক তথ্য ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের বিষয়ে বাদীর সঙ্গে ২৫ কোটি টাকার একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, চুক্তির দিন ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয় এবং বাকি ১৫ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটির ঋণ পরিশোধের সময় প্রদান ও সম্পত্তি হস্তান্তরের কথা ছিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চুক্তি চলমান থাকা অবস্থায় আফাকু কোল্ড স্টোরেজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি একাধিক মামলার আসামি হয়ে গত বছরের ১৯ আগস্ট স্ত্রীসহ গোপনে বিদেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) চলে যান। তিনি পলাতক থাকা সত্ত্বেও তার অনুপস্থিতিতে জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর কোম্পানির একটি ভুয়া বোর্ড সভা দেখিয়ে রেজুলেশন তৈরি করা হয়।
এই জাল রেজুলেশন ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া অভিযোগে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বগুড়ার বড়গোলা শাখা থেকে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য কলব্যাক নোটিশ দেওয়া হলেও অভিযুক্তরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে পুনঃতফসিলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক বগুড়া জোনাল হেড সিকদার শাহাবুদ্দিন বলেন, মামলার বিষয়টি সম্পর্কে আমি এখনও অবগত নই। বিস্তারিত জানার জন্য প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
অন্যদিকে, দুদক বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাহফুজ ইকবাল জানান, আদালতের নির্দেশনার কপি পাওয়া গেছে এবং এ বিষয়ে কমিশনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এআরবি