ফসলি জমিতে পুকুর খননে বাধা, কৃষককে ভেকুর নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগ

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পুকুর খননের কাজে ব্যবহৃত ভেকু (এক্সেভেটর) গাড়ির চাকার নিচে পড়ে জুবায়ের হোসেন (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ভেকুতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের বড় পালশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জুবায়ের একই গ্রামের রফিজের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষিকাজ করতেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, ফসলি জমিতে পুকুর খননে বাধা দেওয়ায় জুবায়েরকে পরিকল্পিতভাবে ভেকুর চাকার নিচে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। ঘটনার পর ভেকু চালক আবদুল হামিদকে (২৮) পুলিশ আটক করে। আটক আবদুল হামিদ টাঙ্গাইল জেলার কাদিমহামজানি উত্তরপাড়ার সবুর উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পালশা গ্রামে ভেকু দিয়ে পুকুর খননের কাজ চলছিল। কৃষিজমি রক্ষার জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে জুবায়ের এতে বাধা দেন। এ সময় ভীমনগর গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ভেকুর নিচে পড়ে জুবায়ের গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মর্গে রাখা আছে।
এদিকে, খবর পেয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, পুকুর খনন করা হবে জানতে পেরে এলাকাবাসী এতে বাধা দেয়। তারা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করতে দেবে না বলে জানায়। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভেকুর মাটি খোঁড়ার যন্ত্রের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনি আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি এখানে আসার পর জানতে পেরেছি, ঘটনার পর জনতা ভেকুতে আগুন দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ ভেকু চালককে আটক করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় আনার চেষ্টা চলছে। ভেকু চালক আবদুল হামিদকে আটক করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
শাহিনুল আশিক/এআরবি