বিয়ের প্রলোভনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায়, যুবক গ্রেপ্তার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ও বন্ধুত্বের সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ এবং পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সবুজ খান (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ঢাকার আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সবুজ খান রংপুর জেলার দেবিগঞ্জ থানার বানিয়াপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকার সাভারের আনন্দপুর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী নারী ও আসামি সবুজ খানের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়ের পর মোবাইল ফোনে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো ও মেসেঞ্জারে অডিও ও ভিডিও কলে আপত্তিকর কথোপকথনে জড়িয়ে পড়েন ভুক্তভোগী। পরে কৌশলে ভুক্তভোগীর অজান্তে ভিডিও ধারণ করেন তিনি।
পরবর্তীতে ওই ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন সবুজ খান। শুরুতে অসহায় হয়ে ভুক্তভোগী আসামির নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর বিভিন্ন ধাপে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
পরবর্তীতে বাকি তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে টাকা না দিলে ভিডিও ও ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেন আসামি। একপর্যায়ে তিনি ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন অনলাইন চ্যাটিং গ্রুপে ছড়িয়ে দেন।
এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ভুক্তভোগী নারী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামি আত্মগোপনে ছিলেন।
র্যাব আরও জানায়, মামলার পর পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী এবং র্যাব-৪, সিপিসি-২, সাভার, ঢাকার যৌথ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন দোসাইদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত সবুজ খান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেড. মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামিকে প্রথমে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর শেষে নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
হাসিব আল আমিন/আরকে