আড়াইহাজারে বালুর মাঠে মাথাবিহীন মরদেহ, জানা গেল হত্যার রহস্য

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বালুর মাঠের পাশ থেকে মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের চার দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার মূল কারণ হিসেবে পরকীয়াজনিত বিরোধের তথ্য পেয়েছে পিবিআই।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ (বিপিএম) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এর আগে শুক্রবার রাতে ঢাকার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. রুহুল আমিন ওরফে রাব্বিকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রাব্বি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাসিন্দা। নিহতের আবরাহাম খান ওরফে আলিম খান (২৭)। তার বাড়িও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়। তিনি রংমিস্ত্রি ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৬ ডিসেম্বর সকালে আড়াইহাজার উপজেলার শ্রীনিবাসদী এলাকায় বালুর মাঠসংলগ্ন রাস্তার পাশে এক যুবকের মাথাবিহীন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করে।
তদন্তে জানা যায়, নিহত আবরাহাম খান ১৫ ডিসেম্বর সকালে ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি বোনের সঙ্গে শেষবারের মতো ফোনে কথা বলেন। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ওয়াজেদ আলী খান বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত রুহুল আমিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
পিবিআই জানায়, আবরাহাম খানের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত আসামির খালার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি পারিবারিকভাবে জানাজানি হলে ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন আবরাহাম খান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রুহুল আমিন ও তার খালা পরিকল্পিতভাবে আবরাহাম খানকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৫ ডিসেম্বর নিহতকে রাজবাড়ী থেকে আড়াইহাজারে ডেকে এনে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পিবিআই আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামির খালা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রুহুল আমিনকে শনিবার আদালতে পাঠানো হবে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মীমরাজ হোসেন/আরএআর