অবৈধ পথে ইতালি যাত্রা, ছেলে জীবিত নাকি মৃত—জানে না পরিবার

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক যুবক অবৈধ পথে ইতালি যাত্রাকালে সাগরে ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে। ছেলেকে ইতালি পাঠাতে জমি বন্ধক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মোট ২৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন বাবা।
নিখোঁজ যুবকের নাম রাকিবুল ইসলাম স্বাধীন (২২)। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার ভুতগাছা গ্রামের ফিরোজ আহমেদের ছেলে। চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি বাড়ি ছাড়েন। তবে তিনি মারা গেছেন নাকি বেচেঁ আছেন, জানে না পরিবার৷
এ ঘটনায় মানবপাচারের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে উল্লাপাড়া মডেল থানা-পুলিশ।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে আবুল কালাম নামের সেই ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। জানা গেছে, নিখোঁজ রাকিবুল ইসলামকে তিনিই বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
উল্লাপাড়া মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, আবুল কালাম নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তিনি বিদেশে লোক পাঠানোর সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। রাকিবুল ইসলাম স্বাধীনকে তিনি পাঠিয়েছিলেন, যিনি বর্তমানে নিখোঁজ। তার বাবা এসে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন।
পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা যায়, চলতি বছরে ভাগ্য বদলের আশায় শতাধিক মানুষের সঙ্গে ট্রলারে করে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেন স্বাধীন। পথে দুর্ঘটনায় অনেকেই সাগরে পড়ে যান। সেই ঘটনার পর থেকেই স্বাধীন নিখোঁজ, তার কোনো খোঁজ মিলছে না।
নিখোঁজ রাকিবুলের বাবা ফিরোজ আহমেদ বলেন, আবুল কালামের ছেলে সাদ্দাম ইতালিতে থাকে। সেই সূত্র ধরে আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ছেলেকে পাঠাতে জমি বন্ধক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মোট ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মার্চের শেষ দিকে আবুল কালাম প্রথমে স্বাধীনকে ভারতের চেন্নাই নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুবাই, মিশর, শ্রীলঙ্কা হয়ে সর্বশেষ লিবিয়ায় নেয়।
স্বাধীনের সঙ্গে যাওয়া আরেক ব্যক্তি ফজলুল হক সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন। সে পরিবারের কাছে জানিয়েছেন, যাত্রার অল্প কিছুদিন পরই তাদের ট্রলারটি ডুবে যায় এবং স্বাধীন আর ফিরে আসেননি।
নিখোঁজ যুবকের মা নার্গিস খাতুন ছেলের খোঁজ পেতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত দালালের কঠোর শাস্তিও দাবি করেছেন।
মো. নাজমুল হাসান/এএমকে