শহীদ মাসুদ রানাকে শেষ বিদায় জানাতে মানুষের ঢল, দাফন সম্পন্ন

সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় নিহত নাটোরের সন্তান করপোরাল মাসুদ রানাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় নাটোরের লালপুর উপজেলার বোয়ালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
শহীদ মাসুদ রানাকে শেষ বিদায় জানাতে কেবল স্বজন বা প্রতিবেশী নন, আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। দাফনের আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের একটি দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।
এর আগে রোববার বেলা ১১টার দিকে মাসুদ রানার মরদেহ বহনকারী সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারটি গ্রামের বাড়ি সংলগ্ন করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কফিন বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার আকাশ-বাতাস।
শহীদ মাসুদ রানা লালপুর উপজেলার বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের বড় ছেলে। তার মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রনি আলমও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য। ২০০৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মাসুদ দীর্ঘ ১৯ বছর নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর স্ত্রী ও আট বছরের একমাত্র কন্যা মাগফিরাতুল মাওয়া আমিনাকে রেখে সুদানে পাড়ি জমিয়েছিলেন মাসুদ। মিশন শুরুর মাত্র ৩৭ দিনের মাথায় গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় তিনি শাহাদত বরণ করেন। দেশের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত কফিনে মুড়িয়ে ফিরলেন এই বীর সৈনিক।
গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত ড্রোন হামলায় মাসুদ রানাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমানে তাদের মরদেহ দেশে পৌঁছায়।
আশিকুর রহমান/বিআরইউ