মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাবেন ২৫ হাজার নেতাকর্মী, প্রস্তুত ৪০০ বাস

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরে সারাদেশের মতো মানিকগঞ্জেও বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উদ্দীপনা। দলের শীর্ষ এই নেতাকে বরণ করে নিতে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সংগঠনের অন্তত ২৫ হাজার নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন। তাদের যাতায়াতের জন্য জেলার সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভা থেকে প্রায় ৪০০টি বাস ও মিনিবাস প্রস্তুত করা হয়েছে।
২০০৮ সালের পর থেকে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা পরিবারসহ লন্ডনে প্রবাসে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন পর তার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ও তৃণমূলের কর্মীরা। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে জেলা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মীর সমাগম নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় যাওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপির মনোনীত মানিকগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মানিকগঞ্জ-১ আসনের এস এ জিন্নাহ কবীর, মানিকগঞ্জ-২ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতার সমন্বয়ে ২৫ হাজার নেতা-কর্মী ঢাকায় যাবেন। এ জন্য জেলা থেকে অন্তত ৪০০টি বাস ও মিনিবাস ভাড়া করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লিটন। আজ মধ্যরাত থেকেই নেতা-কর্মীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন এবং আগামীকাল সকাল থেকে জেলার সাতটি উপজেলা থেকে বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দীপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরছেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। তার দিকনির্দেশনায় আমরা রাজপথে সব আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। বহু নেতা-কর্মী হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দুদিন পর আমাদের সব নেতা-কর্মীর এই কষ্টের অবসান ঘটবে এবং দেশের রাজনীতিতে একটি পরিবর্তন আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। পাশাপাশি দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা যথাযথ মূল্যায়ন পাবেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জিন্নাহ খান ঢাকাপোস্টকে বলেন, গত ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দেওয়া মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের কাছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তার দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে এসব ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মূল্যায়িত হবেন।
জেলা বিএনপির মুখপাত্র ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আ ফ ম নুরতাজ আলম বাহার বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মী, তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ সমর্থকেরা উজ্জীবিত। এই ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরে দেশের তরুণ সমাজের মধ্যেও নতুন প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তিনি দেশে ফেরায় আগামী নির্বাচন ও দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। পরে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পাড়ি জমান। সেই থেকে তিনি পরিবারসহ সেখানেই অবস্থান করছেন। লন্ডন থেকেই তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর ২০১৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি লন্ডনে বসেই দলের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশের মাটিতে পা রাখবেন, যার মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
সোহেল হোসেন/এআরবি