পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা, র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ২

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সায়মন ইসলাম সিয়াম (২০) নামে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় র্যাব-৮, পটুয়াখালী ক্যাম্পে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮ এর বরিশাল এর কমান্ডিং অফিসার (এনপিপি, বিএন) কমান্ডার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেইন।
পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় বসবাসরত কলেজছাত্র সায়মন ইসলাম সিয়াম গত ১৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর মাদারবুনিয়ায় তার নানাবাড়িতে বেড়াতে আসেন। ঘটনার দিন (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক ৩টা ১৫ মিনিটে সিয়াম ও তার খালাতো ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী সরকারি কলেজের উত্তর পাশের বালুর মাঠে ঘুরতে গেলে সেখানে অবস্থানরত একদল সন্ত্রাসী তাদের গতিরোধ করে।পরিচয় জানতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে অভিযুক্তরা লাঠি দিয়ে সিয়ামের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হলে অভিযুক্তরা নিজেদের মোটরসাইকেলে করে সিয়ামকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।হামলার সময় সিয়ামকে বাঁচাতে গেলে তার খালাতো ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুনও গুরুতর আহত হন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত সায়মন ইসলাম সিয়াম ঢাকার রমিজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই র্যাব-৮ তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্তরা এলাকা ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায় এবং অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। তবে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে র্যাব-৮ ও র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানিক দল তাদের পালানোর সম্ভাব্য রুট ও কৌশল বিশ্লেষণ করে অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর সুবিদখালী গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র মো. রাইয়ান এবং ২ নম্বর আসামি একই উপজেলার ডিবুয়াপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের পুত্র মো. রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিশাল র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেইন বলেন,
“গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ ধরনের নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই আইনের বাইরে থাকতে দেওয়া হবে না। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা ও সন্ত্রাস দমনে র্যাব সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৮ পটুয়াখালী (সিপিসি-১) ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার রাশেদসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সোহাইব মাকসুদ নুরনবী/এসএমডব্লিউ