বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত বরিশালের সবজি চাষিরা

বরিশালে চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কৃষকেরা। শীতের শুরুতেই মাঠ পর্যায়ে কম দামে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হলেও নগরীর বাজারে সেই সবজিই বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ দামে।
জেলার বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, আগৈলঝাড়া ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা পাইকারদের কাছে ফুলকপি বিক্রি করছেন ৮ থেকে ১০ টাকা, বাঁধাকপি ৬ থেকে ৮ টাকা এবং শিম ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। এতে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বাবুগঞ্জ উপজেলার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কিন্তু সবজির দাম বাড়েনি। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠ পর্যায়ে কম দামে কেনা সেই সবজিই খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ বা তারও বেশি দামে। এতে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এক ক্রেতা বলেন, কৃষকেরা কম দামে বিক্রি করলেও আমাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। মাঝখানে কারা লাভ করছে, তা বুঝতে পারছি না।
কৃষিখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, একাধিক মধ্যস্বত্বভোগী, পরিবহন সংকট এবং সংরক্ষণ সুবিধার অভাবে কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে দামের এই বড় ব্যবধান তৈরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মামুনুর রহমান জানান, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার ব্যবস্থাপনায় আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষক বাজার চালু, পাইকারি বাজারে নজরদারি বৃদ্ধি এবং কৃষক সমবায় গড়ে তোলা গেলে এই সংকট অনেকটাই নিরসন সম্ভব। বাম্পার ফলনের সুফল কৃষকের ঘরে পৌঁছাতে না পারলে কৃষি খাতের টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এআরবি