পঞ্চগড়ে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা, টানা তিন দিন সূর্যের দেখা নেই

পঞ্চগড়ে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। টানা তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি জেলায়। কনকনে শীতের সঙ্গে উচ্চ আর্দ্রতা যোগ হয়ে জনজীবন ক্রমেই বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ, যানবাহন চালক, শিশু ও বয়স্করা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মাত্র ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মেলায় এবং বৃষ্টির মতো শিশির ঝরতে থাকায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। কুয়াশা না থাকলেও উচ্চ আর্দ্রতার কারণে শরীর ভিজে যাচ্ছে।

গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। ওই দিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীত নিবারণের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। বিশেষ করে ভোর ও সন্ধ্যার সময় শীতের প্রকোপ বেশি অনুভূত হচ্ছে।
সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার দিনমজুর লুকমান বলেন, ভোর থেকে এমন ঠান্ডা থাকে যে কাজে বের হতে মন চায় না। কুয়াশা না থাকলেও বৃষ্টির মতো শিশির পড়ে। শরীর কাঁপে, হাত-পা ঠিকমতো চলে না। আগুন পোহানো ছাড়া উপায় থাকে না।
ভ্যানচালক ফিরোজ বলেন, আজ কুয়াশা নাই, কিন্তু বৃষ্টির মতো পানি পড়তেছে। ভ্যান চালালে শরীর ভিজে যায়। এই অবস্থায় ভ্যান চালাতে হচ্ছে। না চালালে খাব কী?
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, বৃষ্টির মতো যে কুয়াশা পড়ছে, এটাকে আবহাওয়ার ভাষায় ‘মিস্ট’ বলা হয়। এটি বৃষ্টি নয়। আগামী কয়েক দিন এ রকম আবহাওয়া থাকতে পারে। এরপর সূর্যের দেখা মিলবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
নুর হাসান/আরএআর