কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করলেন একই অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী

তাহিরপুর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিদর্শক প্রশান্ত কুমার তালুকদারকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন একই দফ্তরের নিরাপত্তা প্রহরী কাজল রঞ্জন তালুকদার। আহত প্রশান্ত কুমারকে গতকাল বুধবার (৩০ জুন) রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে প্রশান্ত কুমার তালুকদারকে নিরাপত্তা প্রহরী কাজল রঞ্জন তালুকদার ও তার ছোট ভাইসহ আরও ২ জনকে নিয়ে উপজেলা হাসপাতালের সামনে হামলা করে। এসময় পরিদর্শক প্রশান্ত কুমার তালুকদার গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ার তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের ৫০৬ নম্বরে বেডে ভর্তি রয়েছেন।
আহত পরিদর্শক প্রশান্ত কুমার তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বললেন, কাজলের বাড়ি হাসপাতালের সামনে। এই প্রভাবে আমিসহ আমার দফতরের অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে সব সময়। আমি এর প্রতিবাদ করতাম। এজন্য গতকাল দুপুরে সে তার দলবল নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়।
একই দপ্তরের পরিদর্শক পারভেজ আহমদ ঢাকা পোস্টকে বললেন, সে একজন নিরাপত্তা প্রহরী। তার ব্যবহার ভালো না। সব সময় অফিসে মাস্তানি করে। অনেক সময় খারাপ আচরণ করে। কোনো কথা বললে শুনে না।
উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স- এর ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর দ্বিপালী দাস ঢাকা পোস্টকে বললেন, কাজল আমার আওতাধীন কাজ করে। গেল ২ মাস আগে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। পরে আমার ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানালে কাজল আমার কাছে ক্ষমা চায়। তিনি আরও বললেন, এসব ঝামেলায় আমি জড়াতে চাইনা। সামনের জুলাই মাসে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে আমার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী কাজল রঞ্জন তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বললেন, আমি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। এজন্য আমি সব সময় উনাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু উনি গর্ভবতী নারী এএনসি সেবা দিতে উৎকোচ গ্রহণ করে। এর প্রতিবাদ করায় আমার ওপর চরাও হয়ে হামলা করেছেন। এতে আমিসহ আমার ভাই আহত হয়েছি। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে এসেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বললেন, কাজল যে অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। কারণ আমার অফিসে কেউ উৎকোচ গ্রহণ করলে আমাকে জানাবে। না জানিয়ে সন্ত্রাসী হামলা করার সে কে?
তিনি আরও বলেন, কাজল অফিসের সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে প্রায়ই। আমার কাছে অভিযোগ দিলে বিচার করে শেষ করি। গত ২ মাস আগেও দ্বিপালী দাসের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমি বিষয়টি শেষ করে দিয়েছি। তবে গতকাল সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে কেউ এখনও অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অফিসের স্টাফ ছাড়া অন্যরা যারা হামলা করেছে তাদের বিচার আমি করতে পারবো না। এজন্য প্রশান্ত কুমার তালুকদার ইচ্ছে করলে থানায় মামলা করতে পারেন।
এ ঘটনায় তাহিরপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ তরফদার ঢাকা পোস্টকে বললেন, বিষয়টি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে হওয়ায় আমরা তাদের দফতরের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। ঘটনার পর আমরা গিয়েছিলাম। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাকে শেষ করার জন্য বলে এসেছি।
সাইদুর রহমান আসাদ/এমএএস