১১ জানুয়ারি থেকে পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার উৎসব

নতুন বছরেই ভিন্নতর ও আকর্ষণীয় একটি আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব।
এই উৎসবে পর্বতারোহণ, নৌবিহার, কায়াকিং, হাইকিং ও ট্রেইল রান, টিম বিল্ডিং, ট্রেজার হান্ট, ট্রেকিং, ক্যানিওনিং, ট্রি ট্রেইল, রোপ কোর্স, জিপলাইন, রেপলিং, দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ও কেভ ডিসকভারি ইভেন্টগুলোয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুঃসাহসিক অভিযাত্রায় এক অন্য রকম ক্রীড়া অ্যাডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন অংশগ্রহণকারীরা।
চ্যালেঞ্জিং বিভিন্ন ইভেন্টে তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মপ্রত্যয়ী ও উদ্যমী যুবসমাজ গড়ে তোলা। অ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে সাহস ও দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো ও এ অঞ্চলে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করে তোলা হলো মূল উদ্দেশ্য।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাঙামাটিস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ের কর্ণফুলী সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য জানিয়েছেন উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।
এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসবে তিন পার্বত্য জেলা থেকে ৫০ জন এবং দেশের অন্যান্য জেলা থেকে ৫০ জনসহ ১০০ জন অংশ নিয়েছেন। যাদের প্রত্যেকেই ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষ। তাদের মধ্যে রাঙামাটি থেকে ২০, খাগড়াছড়ি থেকে ১৫ ও বান্দরবান থেকে ১৫ জন অংশ নিয়েছেন।
নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, টেকসই পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হতে পারে। বিশেষ করে অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ করবে, যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অ্যাডভেঞ্চার ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে দেশের অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন সম্পদের সম্ভাবনা প্রসারিত ও বিকশিত হবে। এতে অ্যাডভেঞ্চার ক্রীড়াপ্রেমী অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। এ ছাড়া পাহাড় ও সমতলে বসবাসকারী জনমানুষের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতর হবে এবং পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন সুদৃঢ় হবে।
আয়োজকরা জানান, ১১ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে রাঙামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় এই উৎসবের উদ্বোধন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সমাপনী দিন ১৫ জানুয়ারি রাঙামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাতটায় ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে এই উৎসবের সাঙ্গ হবে। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য হলো, জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের অংশ হিসেবে এই অঞ্চলের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং মুজিব বর্ষ উদযাপনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উপস্থাপন করা। রোমাঞ্চপ্রিয় তরুণদের উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারমূলক কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধকরণ। তরুণদের মধ্যে শৃঙ্খলা, পরোপকার, সহনশীলতাসহ বিভিন্ন মানবিক গুণের বিকাশ ঘটানো।
চ্যালেঞ্জিং বিভিন্ন ইভেন্টে তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মপ্রত্যয়ী ও উদ্যমী যুবসমাজ গড়ে তোলা। অ্যাডভেঞ্চার কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে সাহস ও দেশপ্রেম জাগ্রত করা এবং পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো ও এ অঞ্চলে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করে তোলা।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূরুল আলম নিজামী, সদস্য (পরিকল্পনা) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, সদস্য (প্রশাসন) আশীষ কুমার বড়–য়া, রাঙামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সাবেক সভাপতি সুনীল কান্তি দে ও দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পাদক ফজলে এলাহী প্রমুখ।
এনএ