রংপুরে সড়কে বেড়েছে গাড়ি-পথচারী

করোনার বিস্তার রোধে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনেও মাঠে সরব ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি টহলে ছিলেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র ্যাব ও আনসার সদস্যরা।
তবে তিন দিনের চেয়ে চতুর্থ দিনে রংপুর মহানগরে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। সড়কে পথচারীর সঙ্গে বেড়েছিল রিকশা-মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢিলেঢালা রুপ ফিরে পায় লকডাউন। বাইরে বের হওয়া মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা তো দূরের কথা করোনাভীতিই দেখা যায়নি।
রোববার (৪ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। প্রশাসনের মুখোমুখি হলে কারো কারো ছিল নানা অযুহাত। কারণে-অকারণে বের হওয়া এসব মানুষের বেশির ভাগই বিধিনিষেধ অমান্য করে চলাফেরা কররেছেন।
চতুর্থ দিনেও রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার, সড়ক ও স্থানে ২০টি চেকপোস্ট নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয়টি থানা, ট্রাফিক বিভাগ ও গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের মিলে ২২টি টহল টিম কাজ করেন।

রংপুর সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন সমন্বয় করে মহানগর এলাকা ছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শতাধিক মামলা করা হয়।
স্বাস্থ্যবিধি উপিক্ষিত হওয়াতে নগরীর লালবাগে কোরবানির গরুর হাট বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া নিয়মিত চেকপোস্টের বাইরে পাড়ামহল্লায় জটলা করে আড্ডা ও ঘোরাঘুরি বন্ধে মাইকিং করে সতর্ক করছে পুলিশ।
কিন্তু চতুর্থ দিনে গাড়ির চলাচলের পাশাপাশি সড়কে লোকসমাগম বেশি ছিল। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মাস্ক বিতরণ ও জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করে প্রশাসন।
নগরীর মেডিকেল মোড়, ডিসির মোড়, কাচারীবাজার, টাউন হল চত্বর, সুপার মার্কেট মোড়, প্রেসক্লাব মোড়, গ্র্যান্ড হোটেল মোড়, লালবাগ, বিশ্ববিদ্যালয় মোড়, মডার্ন অর্জন মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোবাইকের পাশাপাশি মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিসহ পণ্যবাহী গাড়ির চলাচল ছিল তিনদিনের তুলনায় বেশি।
তবে কাগজপত্র ছাড়া বের হওয়া গাড়ির চালকদের অনেককেই চেকপোস্টে জরিমানা গুনতে হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয় থানা ও ট্রাফিক বিভাগ ১০৬ মামলা দায়ের করেছে। আটক করেছে ১১ যানবাহন।
বিভিন্ন মামলায় ৩ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। এছাড়া যৌথভাবে মেট্রোপলিটন এলাকায় ২৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ প্লাটুন বিজিবি ৪টি ভাগে বিভক্ত হয়ে টহল দিচ্ছে। রংপুরের ৮ উপজেলায় আটটি এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম কাজ করছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর