স্কুলের নিচে আ.লীগ নেতার গোয়ালঘর, গুঁড়িয়ে দিলেন ইউএনও

পাবনার বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়নের দয়ালনগরে তালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচের জায়গা দখল করে গোয়ালঘর বানিয়েছিলেন রাফি উদ্দিন খাজা নামে এক আওয়ামী নেতা। বিষয়টি জানার পর শুক্রবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে সেই গোয়ালঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সবুর আলী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার কারণে সরকারি সিদ্ধান্তে সারাদেশের ন্যায় বেড়া উপজেলার তালিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে মাসুমদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাফি উদ্দিন খাজা স্কুলের নিচের জায়গা দখল করে ইট দিয়ে গোয়ালঘর নির্মাণ করেন। গোয়ালঘরের আড়ালে তিনি নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বেশ কিছু দিন স্কুলের খোঁজখবর জানি না। কয়েকদিন আগে বন্যার কারণে শুনেছিলাম স্থানীয়রা শ্রেণিকক্ষে গরু, ছাগল ও ভেড়া রেখেছে। আমি নিষেধ করলেও তারা শোনেনি।
স্থানীয়রা জানান, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রাফি উদ্দিন খাজা শুধু স্কুলের কক্ষ দখল করে গোয়ালঘরই বানাননি, তিনি দেহব্যবসা, মাদক বিক্রি, জুয়া খেলা, মাদকের আসর, চাঁদাবাজি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ নানা ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাসুমদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল হক জানান, স্কুল দখল করে গোয়ালঘর বানিয়ে তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
বেড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বেশ কিছু দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তিনি এই সুযোগ নিয়েছেন। তবে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার দরকার ছিল। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সবুর আলী বলেন, অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাই। বিদ্যালয়ের নিচতলা থেকে গোয়ালঘর অপসারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যালয় লেখাপড়ার জায়গা, এখানে পাঠদান করা হয়। বিদ্যালয়ের জায়গা কারও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার জন্য নয়।
রাকিব হাসনাত/আরএআর