কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি
দিনের পর দিন ক্রমাগত বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে সংখ্যা বাড়ছে মৃত্যুর। প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাস প্রতিনিয়তই কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ। মহামারি এই ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষায় ঘোষণা করা লকডাউন ঈদুল আজহা ঘিরে শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আজ থেকে চলছে গণপরিবহন, খুলেছে মার্কেট। তবে চালুর সিদ্ধান্তে চালক, মালিক ও শ্রমিকরা খুশি হলেও প্রথম দিনেই কেউ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। লকডাউন শিথিল হলেও নির্দেশনা রয়েছে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে বাস চলাচল করবে।
তবে প্রথম দিনেই বাসে যে যেভাবে পারেন উঠছেন ও নামছেন। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই করছে না কেউ। বাসে দাঁড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে যাত্রী। অনেকেরই মুখে নেই মাস্ক। চালকের সহযোগীর (হেলপার) নেই স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে তেমন ধারণা।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড, রেডিও কলোনি, বিশমাইল, নবীনগর, পল্লিবিদ্যুৎ, বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানিবাজার, জামগড়া ও আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করছে বাসসহ যাত্রীবাহী পরিবহন। যেখানে ছিটেফোঁটা নেই স্বাস্থ্যবিধির।
চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকা থেকে বাসে উঠেন কামরুজ্জামান নামের এক যাত্রী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কবিরপুর থেকে বাইপাইলে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলাম। আসলে বাসে যে যেভাবে পারে উঠছেন। এখানে করোনা ভাইরাস যেন রূপকথার গল্প। তিনি বলেন, আমি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার চেষ্টা করলেও গণপরিবহনে তা সম্ভব হয়নি।
আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক জামান বলেন, ভাই আমরা তো এতদিন না খেয়ে ছিলাম। কেউ তো পাশে দাঁড়ায়নি। এতদিন কেউ খোঁজখবর নিলো না, আর আজ বাস নিয়ে সড়কে নামতেই সাংবাদিক-পুলিশ ত্রুটি ধরার চেষ্টা করছেন। আসলে যাত্রীবাহী বাসে শত চেষ্টা করলেও শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব নয়। কারণ যাত্রীরা নিজেরাই কারও কোনো কথা শোনেন না।
সাভার পরিবহনের হেলপার তৌহিদুল বলেন, প্রথমেই আমরা যাত্রীদের হাতে স্যাভলন মারার চেষ্টা করি। যাত্রীরা বলেন, আমরা স্যাভলন নেব না, হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে। একথা বলেই তারা বাসের সিটে গিয়ে বসে। এছাড়া দাঁড়ানো যাত্রীরা জোর করেই বাসে
উঠেন।
আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসলে আমাদের যার যার অবস্থান থেকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। গণপরিবহনে চলাচল করলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কেউ না মানলে করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের অভিহিত করতে হবে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, মাস্ক হলো করোনাভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষার অন্যতম উপায়। সর্বপ্রথম মাস্ক পরিধান করা নিশ্চিত করতে হবে। আর মাস্ক পরা থাকলে হাঁচি বা কাশি না দিলে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা নাই।
মাহিদুল মাহিদ/এমএসআর