৬ বছর আগে দেখা সমস্যার সমাধান করলেন বরিশালের ডিআইজি

মোটা পাইপ উপচে গ্যালনের পর গ্যালন পানি পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল অনেক বছর ধরে। তা বন্ধ করতে কার্যত উদ্যোগ নেননি কেউ। দায়িত্বরতরা জানিয়েছিলেন, পানি সরবারহ করতে গিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি। চাইলেই তা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে বরিশালের রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান উদ্যোগ নিয়ে অবশেষে সফল হলেন।
রোধ করলেন পানির অপচয়। সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে বন্ধ হয়েছে পাইপ উপচে পানি পড়া। এর মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ধরে অপচয় হতে থাকা সরকারি টাকায় পরিশোধিত পানি রক্ষা পেল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এহসানউল্লাহ। তিনি বলেন, ডিআইজি স্যার অত্যান্ত বিচক্ষণ মানুষ। তিনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। নয়তো দীর্ঘদিন ধরে একই প্রক্রিয়ায় নষ্ট হওয়া পানি রক্ষা করতে কেউ নজর দেননি। তার নজরে আসার পরই সংশ্লিষ্টদের ডেকে এনে পানির অপচয় রোধ করতে নির্দেশ দেন। এরপরই সমস্যার সমাধান হয়।
এহসানউল্লাহ বলেন, আমরা আগে কেউ অক্সিজেনের গুরুত্ব বুঝতাম না। করোনাকালে বুঝতে পারছি এর গুরুত্ব। তেমনি এখন হয়তো পানির গুরুত্ব অনেকেই বোঝেন না। কিন্তু সংকট শুরু হলে তখন হাহাকার শুরু হবে। ডিআইজি স্যার পানির গুরুত্ব জেনেই তৎপর হয়ে অপচয় রোধ করেছেন। এর মাধ্যমে রক্ষা পেয়েছে রাষ্ট্রের টাকা।
জানা গেছে, রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের তিন তলা ভবনের ছাদে স্থাপিত পানির ট্যাংকি বেয়ে পাইপ উপচে পানি পড়ত। কবে এমন অপচয় শুরু হয়েছিল তা স্মরণে নেই অফিস স্টাফদেরও। বছরের পর বছর ধরে এভাবে নষ্ট হতে দেখে বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিয়েছিলেন।
এসএম আক্তারুজ্জামান ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল বরিশাল পুলিশ সুপার পদে যোগদান করে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) হয়ে হেডকোয়াটার্সে পদায়ন হন।
তিনি জানান, পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালনকালে ডিআইজ অফিসে এসেও এভাবে পানি পড়তে দেখেছিলেন। তবে ডিআইজি হয়ে চলতি বছর বরিশালে যোগদান করার পর একইভাবে পানির অপচয় দেখে সমাধানকল্পে উদ্যোগ নেন।
রেঞ্জ ডিআইজি জানান, এভাবে পানি পড়তে আমি আগেও দেখেছি। সহকর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানালেন পানি সরবারহ করতে গিয়ে কিছু পানি পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন পানি অপচয় হবে তার কোনো উত্তর ছিল না। ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পানি সরবারহের জন্য একজন অপারেটরও দায়িত্বরত রয়েছেন। তার কাছে জানতে চাইলে তিনিও সন্তোষজনক পদক্ষেপ নিতে পারলেন না। তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি যেন না অপচয় হয় সেই ব্যবস্থা নিতে। কয়েকদিন কাজের পর আজ সম্পূর্ণরূপে পাইপ উপচে পানি পড়া বন্ধ হয়েছে।
এসএম আক্তারুজ্জামান যুক্ত করেন, অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নতি হলে সৌদি আরব থেকে তেলের সঙ্গে খাবার পানি কিনে আনা যাবে। কিন্তু তাতে তো সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে। এর চেয়ে অপচয় রোধ করা সর্বোৎকৃষ্ট উপায়।
আর এই পুরো ঘটনা নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন রেঞ্জ ডিআইজি।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস